রোববার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

বংশাই-লৌহজং নদীর ভাঙ্গন আতংকে মসজিদ-মন্দির ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, ১৬:০১

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বর্ষার শুরুতেই পানি বৃদ্ধির ফলে বংশাই-রৌহজং নদীতে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। তীব্র নদী ভাঙ্গনে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, গাছপালা, হাট বাজার, মসজিদ-মন্দির ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনার ক্ষতি হচ্ছে।

শুক্রবার (১৩ জুন) ভুক্তভোগী এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, বংশাই পানি বৃদ্ধির ফলে বংশাই নদীর মির্জাপুর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড গাড়াইল ও পুষ্টকামুরী পুর্বপাড়া, ৫ নং ওয়ার্ডের কুমারজানি ও বাওয়ার কুমারজানি, দুই নং ওয়ার্ডের পুষ্টকামুরী পশ্চিমপাড়া হুমকির মুখে পরেছে। ফতেপুর ইউনিয়নের ফতেপুর, থলপাড়া, হিলড়া আদাবাড়ি, পারদিঘী, চাকলেশ্বর, বৈলানপুর, গোড়াইল, গাড়াইলসহ বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দির, হাট জাহার ও রাস্তাঘাট ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। 

নদী ভাঙ্গনে ফতেপুর বাজার সংলগ্ন পাকা রাস্তা বিলীন হয়ে মির্জাপুর উপজেলার সঙ্গে বাসাইল উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তীব্র নদী ভাঙ্গনে হাট ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মসজিদ, হাট ফতেপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, মির্জাপুর-বাসাইল রাস্তা, ফতেপুর-মহেড়া-মির্জাপুর রাস্তাসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান এবং হাট ফতেপুর হাট ও বাজার এখন হুমকির মুখে। এই ইউনিয়নের ১০-১২ টি গ্রাম এখন মির্জাপুরের মানচিত্র থেকে একবারেই হারিয়ে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

হিলড়া আদাবাড়ি মোকছেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইব্রাহীম মিয়া ও ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদ হোসেন অভিযোগ করেন, নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা ও ব্লক দিয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মানসহ ফতেপুর ইউনিয়নকে রক্ষার জন্য শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী ইতিপূর্বে মানব বন্ধন কর্মসূচী করেছে। তারপরও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে না। বংশাই নদীর ভাঙ্গনের ফলে ফতেপুর, থলপাড়া, বৈল্যানপুর, হিলড়া আদাবাড়ি বাজার, গোড়াইল, গাড়াইল, পুষ্টকামুরী পুর্বপাড়া, বাওয়ার কুমারজানি, ত্রিমোহন, বান্দরমারা, যুগিরকোপা, রশিদ দেওহাটা  চাকলেশ্বরসহ বিভিন্ন গ্রামের রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবী জানিয়েছে।

অপরদিকে একই অবস্থা দেখা দিয়েছে লৌহজং নদীতে। ভুক্তভোগী একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, লৌহজং নদীর মাঝালিয়া, গুনটিয়া, চুকুরিয়া, বরাটি, ইচাইল, সারুটিয়া, পুষ্টকামুরী, দেওহাটা, কোর্ট বহুরিয়া, বহুরিয়া, কামারপাড়া, নাগরপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙ্গনে বহু পরিবার দিশেহারা হয়ে পরেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্রিজ,কালভার্ট, রাস্তা-ঘাট, হাট বাজারসহ ফসলি জমি। ৭-৮ টি পাকা ব্রিজ  হুমকির মুখে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনিরুল সাজ রিজন বলেন, পানি বৃদ্ধির পলে বংশাই-লৌহজং নদীর আশপাশে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে বরে জানতে পেরেছেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ এলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাত হোসেন জানিয়েছেন, মির্জাপুরে বেশ কয়েকটি এলাকায় নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য ইতি পূর্বে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে।

ইত্তেফাক/এএইচপি