ক্লাব বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচে রোববার রাতে 'সি' গ্রুপের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামে বায়ার্ন মিউনিখ ও অকল্যান্ড সিটি। ম্যাচে ওশেনিয়া চ্যাম্পিয়নস লিগের বিজয়ী দল অকল্যান্ড সিটির জালে গোল উৎসব করেন সাচা বোয়ে, মাইকেল ওলিস মুসিয়ালা, থমাস মুলাররা। ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধে হ্যারি কেইনের বদলি হিসেবে নেমে হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েছেন ২২ বছর বয়সী জামাল মুসিয়ালা।
এছাড়াও অকল্যান্ডের জালে বল জড়ানোর মধ্যদিয়ে বায়ার্নের হয়ে ২৫০তম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন জার্মান তারকা থমাস মুলার। পুরো ম্যাচে বায়ার্ন ১৭টি শর্ট গোলবারে রাখে। অন্যদিকে মাত্র একটি শট বায়ার্নে গোলবারে রাখতে পেরেছিল নিউজিল্যান্ডের ক্লাব অকল্যান্ড সিটি। তাও সেই শট রুখে দেন জার্মান তারকা গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়ার। এমন ম্যাচের পর ইউরোপ ফুটবল এবং ওশেনিয়া ফুটবলের মধ্যে যে বিস্তার ফারাক আরও পরিষ্কার হয়।
এছাড়াও ক্লাব বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো এক ম্যাচে এত গোল দেখল ফুটবল বিশ্ব। যদিও এর আগে একাধিক বার দুই অঙ্কের গোলের দেখা পেয়েছিল জার্মান জায়ান্ট ক্লাবটি। এর আগে ১৯৭১ সালে বুন্দেসলিগায় বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ১১-১ ব্যবধানে জয় পেয়েছিল বায়ার্ন মিউনিখ। এছাড়াও ২০২১ সালে আঞ্চলিক লীগের দল ব্রেমার এসভিকে ১২-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল বায়ার্ন।
তবে জার্মান জায়ান্টদের সবচেয়ে বড় জয় ডিজেকে ওয়াল্ডবার্গের বিপক্ষে। ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে ডিএফবি কাপে দলটির বিপক্ষে বায়ার্ন মিউনিখ জয় পেয়েছিল ১৬-১ ব্যবধানে। রোববার রাতে অকল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের একটা সময় মনে হচ্ছিল সেই রেকর্ড ভেঙে ফেলবেন মুলার-মুসিয়ালরা। তবে শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তবে পূর্বের দলগুলোতে সবার পেশাদার ফুটবলার হলেও অকল্যান্ড সিটির খেলোয়াড়রা ছিলেন পার্টটাইম ফুটবলার। দলটির একজন ফুটবলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। এছাড়াও একজন ছিলেন বিমা কর্মী, একজন নরসুন্দর, একজন কোকা-কোলার বিক্রয় প্রতিনিধি, একজন গাড়ি বিক্রেতা এবং বেশ কয়েক জন ছাত্র।
এছাড়াও দলটির ২২ বছর বয়সী লেফট-ব্যাক নাথান লোবো ক্লাব বিশ্বকাপ খেলতে এসে ভার্চুয়ালভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে হারের পর অকল্যান্ডের গোলরক্ষক কনল ট্রেসি বলেন, 'ক্লাব বিশ্বকাপে খেলার জন্য আমার অফিস থেকে বেতন ছাড়া ছুটি নিতে হয়েছে। যার কারণে আমার বাসা ভাড়া দিতেও একটু সমস্যা হবে। তবে বায়ার্ন মিউনিখ, বেনফিকা, বোকা জুনিয়র্সের মতো বড় ক্লাবগুলোর বিপক্ষে খেলার সুযোগ আমি হাতছাড়া করতে চাইনি।'
এছাড়াও দুই দলের মার্কেট ভ্যালু ও বার্ষিক আয়ের হিসাবের দিকে তাকালে দুই দলের মধ্যে পার্থক্যটা চোখে পড়বে। যেখানে অকল্যান্ড সিটি গেল মৌসুমে ৪ লাখ ৮৮ হাজার পাউন্ড আয় করেছে। অন্যদিকে বায়ার্ন মিউনিখ গেল মৌসুমে আয় করেছে ৯৫১.৫ মিলিয়ন ইউরো। শুধু তাই নয়, অকল্যান্ড অপেশাদার খেলোয়াড়দের সপ্তাহিক বেতন সীমা সর্বোচ্চ ৬৬ পাউন্ড।
অন্যদিকে বায়ার্নের এক হ্যারি কেইনের প্রতি সপ্তাহের বেতন ৪ লাখ পাউন্ড। সেই হিসেবে অকল্যান্ডের সেরা বেতন প্রাপ্ত খেলোয়াড়ের ইংলিশ ফরোয়ার্ডের এক সপ্তাহের বেতন আয় করেত প্রায় ১১৭ বছর সময় লাগবে। এছাড়াও ট্রান্সফার মার্কেটের রিপোর্ট অনুযায়ী। অকল্যান্ড সিটির দলের মার্কেট ভ্যালু ৪.৫৮ মিলিয়ন ইউরো। অন্যদিকে বায়ার্নের দলের মার্কেট ভ্যালু ৯০৩.৫ মিলিয়ন ইউরো।