ইরানে সম্প্রচারের সময় ইসরাইলি হামলায় সাহসী ভূমিকার জন্য আলোচনায় ওঠে এসেছেন দেশটির অন্যতম খ্যাতিমান সংবাদ উপস্থাপিকা সাহার ইমামি। সোমবার রাতে রাজধানী তেহরানের ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান ব্রডকাস্টিং-আইআরআইবি ভবনে ইসরাইলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি। ঠিক তখনই ঘটে প্রচণ্ড এক বিস্ফোরণ। অনুষ্ঠান চলার সময়েই টেলিভিশন স্টেশনে আছড়ে পড়ে ইসরাইলের ক্ষেপণাস্ত্র। তবে এমন ভয়াবহ হামলার পরও থামেননি ইমামি।
এ হামলার এক ঘণ্টা না পেরোতেই আবার ফিরে এসে লাইভ সম্প্রচার চালিয়ে যান তিনি। এমন সাহসী পদক্ষেপের জন্য এখন প্রশংসায় ভাসছেন ইমামি। তবে এই হামলায় দুজন নিহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে ইসলামিক রিপাবলিক নিউজ এজেন্সি (আইআরএনএ)।
ঘটনার সময়কার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ইমামি টিভিতে ইসরাইলের সমালোচনা করার পরপরই স্টুডিওর ভেতর ধোঁয়ায় ভরে ওঠে। ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট জাহরা বেহরামজাদেহ আজার বলেছেন, ইমামি আজ ইরানি নারীদের সাহসের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তিনি আরও বলেছেন, ‘এই নারী এখন আগ্রাসনের মুখে পুরো ইরানি জাতির কণ্ঠস্বর।’
সাহার ইমামি ইরানের সবচেয়ে পরিচিত সংবাদ উপস্থাপকদের একজন। ১৯৮৪ সালে তেহরানে জন্মগ্রহণকারী ইমামি প্রমাণ করেছেন, প্রবল আগ্রহ ও নিষ্ঠাই একজনকে নিজ লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারে। যদিও তিনি কৃষিবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেন। বিশেষত খাদ্য প্রকৌশলে। কিন্তু তার প্রকৃত টান ছিল গণমাধ্যম ও জনসেবার দিকে। তিনি ২০১০ সালে সংবাদ উপস্থাপনায় আসেন এবং দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। মিডিয়ায় তার পদার্পণ ছিল বাধাবহুল। তবে একান্ত প্রচেষ্টার ফলেই তিনি জায়গা করে নেন ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্র্রচার কেন্দ্রে। তার মতে, নারী সাংবাদিকরা সমাজে পরিবর্তন আনার বড় ভূমিকা রাখেন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মেয়েদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকেন। সাহার ইমামি বিবাহিত এবং তার একটি সন্তান রয়েছে।
এদিকে সাংবাদিক সুরক্ষা কমিটি (সিপিজে) সোমবার তেহরানে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলের স্টুডিওতে ইসরাইলের হামলায় হতবাক হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তারা। হিজবুল্লাহ এটিকে ইরানি জনগণের বিপ্লব বন্ধ করার এবং সত্য মুছে ফেলার একটি পরিকল্পিত হামলা বলে দাবি করেছে।