শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

জেলেদের লক্ষ্য করে গুলির অভিযোগ কোস্টগার্ডের বিরুদ্ধে, নিখোঁজ ২

আপডেট : ১৮ জুন ২০২৫, ০৯:৪৫

বরগুনার পাথরঘাটায় সাগর থেকে মাছ ধরে ফেরার পথে দুটি ট্রলার জব্দ করে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে কোস্টগার্ডের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে, জেলেদের ওপর গুলি ছোড়েন কোস্টগার্ডের সদস্যরা। তাছাড়া কোস্টগার্ড সদস্যদের মারধরে ট্রলার থেকে নদীতে পড়ে অন্তত দুই জেলে নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করেছেন স্থানীয় মৎস্যজীবীরা।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাত ৯ টার দিকে পাথরঘাটা কোস্টগার্ড স্টেশনে কোস্টগার্ড ও জেলে-স্থানীয় জনতার মধ্যে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষের সময় এই ঘটনা ঘটে।

জেলেদের অভিযোগ, মঙ্গলবার সকালে দুটি ট্রলার বোর্ড  জব্দ করে কোস্টগার্ড এবং ট্রলারে থাকা স্টাফদের মারধর করেন তারা। এ সময় নদীতে পড়ে যান দুজন জেলে যাদের এখনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে বোর্ড মালিক এর কাছে টাকা দাবি করে কোস্টগার্ড। টাকা না দেওয়ায় সন্ধ্যার দিকে ট্রলির যাবতীয় সরঞ্জাম কেটে ফেলার ব্যবস্থা নেয় কোস্টগার্ড। এ সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধদের লক্ষ্য করে থেমে থেমে প্রায় ১০থেকে ১২ রাউন্ড গুলি করেন কোস্টগার্ডের সদস্যরা। 

সবশেষ বিক্ষুব্ধরা কোস্টগার্ডের ব্যবহৃত একটি গাড়ি ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

আটক ট্রলারের মালিক ও বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুম আকন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে মাছ ধরার জন্য যান উপকূলের হাজার হাজার জেলে। বঙ্গোপসাগরে আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে আমার একটি ট্রলার ঘাটের দিকে আসে। এ সময় কোস্ট গার্ড ট্রলার আটক করে। এর পরপরই আলম কোম্পানির আরেকটি ট্রলার আটক করে। পরে আমাদের উপস্থিতিতে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তখন আমরা বৈধ কাগজপত্র দেখালেও তা গ্রহণ না করে ট্রলার ধ্বংসের চেষ্টা করে কোস্ট গার্ড। এ সময় পাথরঘাটা মৎস্য কর্মকর্তা আমাদের বৈধ কাগজপত্র ও হাইকোর্টের আদেশ দেখে ট্রলার ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে চলে যান। তবে কোস্ট গার্ড সদস্যরা বিষয়টি না মেনে মঙ্গলবার রাতে ট্রলার ধ্বংস করা শুরু করেন। এ সময় জেলেরা আপত্তি জানালে দুজন জেলেকে মারধর করা হয়। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সংঘর্ষ শুরু হয়।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান বলেন, কোস্টগার্ড নদী থেকে দুটি বোর্ড জব্দ করে এবং সেগুলোর যাবতীয় মালামাল কেটে ফেলার সময় জেলেরা বাঁধা দেয়। তা নিয়ে এই ঘটনার সূত্রপাত। তবে এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ ঘটনা জানা যায়নি।

জেলে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এমন কোনো ঘটনা জানা যায়নি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে পরবর্তীতে জানানো হবে।

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। পরবর্তীতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ নেই। বর্তমানে ইউএনও মহোদয় ও জেলেদের যারা প্রধান রয়েছেন তাদেরকে নিয়ে সমন্বয় করে একটি সমাধানের চেষ্টা চলছে। 

ইত্তেফাক/এপি