ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে দুই বছরের শিশুপুত্রকে শাবল দিয়ে আঘাত করে হত্যার পর নিজ ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখার অভিযোগ উঠেছে এক বাবার বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে দুটি ছাগলও মেঝেতে পুঁতে রাখেন তিনি।
বুধবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত ১১টার দিকে পশ্চিম ধুরাইল এলাকা থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাবা নুরুল আমিনকে (৩০) আটক করা হয়েছে। শিশুটির নাম আইয়ুব আলী। তার বাবা উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের পশ্চিম ধুরাইল গ্রামের ফজলু মিয়ার ছেলে নুরুল আমিন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত নুরুল আমিন দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। বুধবার বেলা ৩টার দিকে হঠাৎ করে তিনি স্ত্রী জেসমিনকে মারধর করেন এবং শিশু আইয়ুব আলীকে টেনে-হিচড়ে নিজ ঘরে নিয়ে যান। এরপর প্রায় চার ঘণ্টা কাউকে ঘরের কাছে যেতে দেননি। কেউ কাছে এলে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেন। এতে পরিবারের সদস্যরা পাশের বাড়িতে সরে যায়।
পরে সন্দেহ হলে আশপাশের লোকজন খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন শিশু আইয়ুব আলীকে ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখেন তিনি। খবরটি পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ গিয়ে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নুরুল আমিন এর আগেও তিনটি বিয়ে করেছিলেন। মানসিক সমস্যার কারণে আগের তিন স্ত্রীই তাকে ছেড়ে চলে যান। শেষ স্ত্রীকে নিয়ে তিনি আবার সংসার শুরু করেছিলেন। এ ঘরের একমাত্র সন্তান ছিল আইয়ুব। তাকেও নির্মমভাবে হত্যা করলেন।’
নুরুল আমিনের ভাবি আমেনা বেগম বলেন, ‘আমি বাড়িতে ছিলাম না। বিকেলে এসে দেখি সে দরজা বন্ধ করে ঘরে শুয়ে আছে। ভেবেছি হয়তো বাচ্চা ঘুমাচ্ছে। সন্ধ্যায় কোনো শব্দ না পেয়ে লোকজন নিয়ে ঘরে ঢুকি। তখন দেখি বাচ্চা নেই। পরে জানতে পারি, সে বাচ্চা ও দুটি ছাগল মেরে ঘরের মেঝেতে পুঁতে রেখেছে।’
এ ব্যাপারে হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সাগর সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছে এবং অভিযুক্ত বাবা নুরুল আমিনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তাধীন। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।