মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

আরাঘচিকে হত্যার ইসরায়েলি ষড়যন্ত্র ভেস্তে দিল তেহরানের গোয়েন্দারা

আপডেট : ২০ জুন ২০২৫, ১৩:২৪

ইরানের গোয়েন্দা সংস্থা দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচিকে হত্যার একটি বড় ধরনের ইসরায়েলি ষড়যন্ত্র ভণ্ডুল করেছে বলে দাবি করেছেন ইরানি সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও উপদেষ্টা মোহাম্মদ হোসেইন রংবারান। তিনি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, সম্প্রতি ‘সঠিক ও নিখুঁত নিরাপত্তা ব্যবস্থার’ মাধ্যমে তেহরানে এই হত্যাচেষ্টা নস্যাৎ করা হয়েছে।

লেবাননের সম্প্রচারমাধ্যম আল-মায়েদিনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

রংবারান বলেন, ‘এটি ছিল একটি বৃহৎ ষড়যন্ত্র। আমাদের বীর “অজানা সৈনিক”—অর্থাৎ গোয়েন্দারা সময়মতো ব্যবস্থা নিয়ে এ ধরনের ভয়াবহ আগ্রাসন রুখে দিয়েছেন।’

তিনি আরও জানান, সম্প্রতি সময়ে এই হামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল এবং এটি সফল হলে ইরানের নিরাপত্তা ও কূটনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা লাগতে পারত।

ইরান সরকার বা আরাগচির দপ্তর থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি এখনও আসেনি। তবে স্থানীয় পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

এই ঘটনাটি এমন এক সময়ে সামনে এল, যখন আব্বাস আরাঘচি জেনেভায় জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য নিয়ে গঠিত ইউরোপীয় ত্রয়ীর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই আলোচনার প্রেক্ষাপটে ইরান ও ইসরায়েলি দখলদার শাসনের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে রাঙ্গবারান সরাসরি এই হত্যাচেষ্টার সঙ্গে আরাঘচির কূটনৈতিক তৎপরতার যোগসূত্র স্থাপন করেন। তিনি ইঙ্গিত দেন, ইসরায়েল এই গুপ্তচর হামলার মাধ্যমে ইরানের অবস্থান দুর্বল করতে চেয়েছিল। রাঙ্গবারান বলেন, এই হুমকি ‘বাস্তব ও গুরুতর।’ তার মতে, এই ষড়যন্ত্র আঞ্চলিক সংকটের গভীরতা এবং আরাঘচির কূটনৈতিক ভূমিকাকে প্রতীকী দিক থেকেও আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে।

নিজ বক্তব্যে রাঙ্গবারান আরাঘচিকে কেবল অভিজ্ঞ কূটনীতিক হিসেবেই নয়, বরং ইসলামি প্রজাতন্ত্রের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবেও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আরাঘচি নিজেকে কেবল একজন কূটনীতিক হিসেবে দেখেন না, বরং তিনি নিজেকে মাতৃভূমির একজন সৈনিক মনে করেন।’ তিনি প্রয়াত কুদস ফোর্সের কমান্ডার শহিদ জেনারেল কাসেম সোলাইমানির সঙ্গে আরাঘচির অবস্থানকে তুলনা করে বলেন, ‘তিনি শহীদ হওয়ার বাসনা পোষণ করেন সেই পথেই।’

রাঙ্গবারান তার বক্তব্যের শেষে দেশের জনগণকে আহ্বান জানান, যাতে তারা আরাঘচি ও তার সহকর্মীদের পাশে দাঁড়ায় এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে ইরানের সার্বভৌমত্ব ও অধিকার রক্ষার প্রচেষ্টায় তাদের সমর্থন জানায়।

এদিকে, ইরান সতর্ক করে বলেছে, দেশটির গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ছে। এ অবস্থায় উচ্চপদস্থ ইরানি কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পারমাণবিক ইস্যুতে এক সময়কার শীর্ষ আলোচক আরাঘচি এখন পশ্চিমা কূটনীতিতে অভিজ্ঞ এক মুখ, এবং ওয়াশিংটন ও তেল আবিবের চাপে ইরানের অবস্থান তুলে ধরার অন্যতম ব্যক্তিত্ব তিনি।

ইত্তেফাক/এনএন