বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

১৮তম নিবন্ধন ভাইভায় অনুত্তীর্ণদের আন্দোলন, জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

আপডেট : ২২ জুন ২০২৫, ১৭:৫৭

১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল পুনর্বিবেচনার দাবিতে আন্দোলনরত প্রার্থীদের ওপর জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। রোববার (২২ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে প্রেসক্লাব এলাকা অবরোধ করে রেখেছিলেন এসব আন্দোলনকারী। পরে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন মৌখিক পরীক্ষায় ৮৩ হাজার পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ২৩ হাজার উত্তীর্ণ হতে পারেননি। এখন উত্তীর্ণ না হওয়া পরীক্ষার্থীদের দাবি, তাদের ইচ্ছাকৃতভাবে অকৃতকার্য করানো হয়েছে। তাদের উত্তীর্ণের সনদ দিতে হবে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা জোনের এডিসি জিসানুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, এসব আন্দোলনকারী সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়ান। প্রায় এক ঘণ্টা তারা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ কারণে প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

জানা গেছে, সকাল ১১টার দিকে আন্দোলনকারীরা প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হয়ে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। পুলিশ বারবার সরে যাওয়ার নির্দেশ দিলেও আন্দোলনকারীরা তা না মেনে স্লোগান দিতে থাকেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে, বেলা ১১টা ২৩ মিনিটের দিকে পুলিশ জলকামানের পানি ছোড়ে এবং সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও রেকর্ড ২০ হাজার ৬৮৮ জন প্রার্থীর কোনো ভাইভা না নিয়েই ফল প্রকাশ করা হয়েছে। অর্থাৎ মৌখিক পরীক্ষায় (ভাইভা) ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সুনামগঞ্জ থেকে আন্দোলনে অংশ নিতে আসা রাজিবুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো ভাইভা নেওয়া হয়নি। তাহলে কীভাবে ফলাফল দিল? এত সংখ্যক প্রার্থী কীভাবে ফেল করল? এর পেছনে এনটিআরসির কারসাজি আছে, আমরা এটা মানি না।’

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে গত ১৫ জুন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসি) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেছিলেন এসব ভুক্তভোগী প্রার্থী। তাদের প্রধান দাবি- ফলাফল পুনর্মূল্যায়ন করে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী সবাইকে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ প্রদান করতে হবে।

এদিকে, আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে তিনজন প্রতিনিধির সঙ্গে পুলিশ আলোচনায় বসেছে বলে জানা গেছে।

আন্দোলনকারীরা হামিদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

জিসানুল হক আরও বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। তবে লাঠিপেটা করা হয়নি বা মারধর করা হয়নি। এ ঘটনার পর আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। যানজট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

ইত্তেফাক/এসএ