শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

লোভনীয় অফারেও ইন্টারনেট গ্রাহক ধরে রাখতে পারছে না মোবাইল অপারেটররা

আপডেট : ০৬ জুলাই ২০২৫, ১৩:০৬

দিন দিন ইন্টারনেট গ্রাহক হারাচ্ছে মোবাইল অপারেটররা। যার ধাক্কায় কমেছে অপারেটরদের আয়ও। নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির জন্য উচ্চ সিম কর এবং মূল্যস্ফীতিকে দায়ী করছেন সেবাদাতারা। যদিও একইসময়ে ব্রডব্যান্ড গ্রাহক বেড়েছে প্রায় আট লাখ। লোভনীয় অফারেও ইন্টারনেট গ্রাহক ধরে রাখতে পারছে না মোবাইল অপারেটররা

এক মাস মেয়াদে ১০০ জিবি ডাটা নিয়ে সাজানো হয়েছে সুপার ইন্টারনেট প্যাক। ‘নেটের এক নম্বর অফারে’ ৯৮৮ টাকায় মিলছে তিন মাস মেয়াদী ডাটা। এতসব অফারের প্রচারণা চালিয়েও গ্রাহক টানতে পারছে না মোবাইল অপারেটররা।
 
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের জুনে দেশে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল ১২ কোটি ৯৭ লাখ। সবশেষ এপ্রিল পর্যন্ত যা নেমে এসেছে ১১ কোটি ৬৫ লাখে। অর্থাৎ গ্রাহক কমেছে এক কোটি ২৬ লাখ।
 
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শফিকুল বলেন, ‘আগে যেরকম মোবাইলে ইন্টারনেট কিনে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতাম, এখন সেই দামে পাচ্ছি না। আগে মাসে ১০ জিবি, ১৫ জিবি কিনতাম। এখন কেনাই হয় না। বাসায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করি।’
 
রফিক নামে এক চাকরিজীবী বলেন, ‘বাসা আর অফিসে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট আছে। এছাড়া অফিসের কাজে যেখানেই যাই ব্রডব্যান্ড সুবিধা পাচ্ছি। দাম বেড়ে যাওয়ায় মোবাইলে ডাটা কেনা হয় খুবই কম।’  
 
গ্রাহক হারানোর প্রভাব পড়েছে অপারেটরদের আয়েও। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ৩ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা আয় করেছে গ্রামীণফোন। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আড়াই শতাংশ কম। এই সময়ে রবির আয় কমেছে ভয়েসে দশমিক সাত শতাংশ এবং ডাটায় ১১.৪ শতাংশ। তবে এ বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি বাংলালিংক।
 
রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স সাহেদ আলম বলেন, ‘সিম ট্যাক্স বেড়ে যাওয়ায় আমরা যে ভর্তুকি আগে দিতাম, সেটা এখন দিতে পারছি না।’
 
গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তানভীর মোহাম্মদ বলেন, ‘সিম ট্যাক্স বা এ জাতীয় নেগিটিভ বেরিয়ারগুলো রয়েছে, সেটাকে আরেকটু পজিটিভলি দেখা গেলে অব্যশই এমন পরিস্থিতিতে সহযোগিতা হবে।’
 
মোবাইল অপারেটররা ধাক্কা খেলেও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহক বেড়েছে প্রায় ৮ লাখ। ব্রডব্যান্ড ব্যবহার করছেন ১ কোটি ৪৩ লাখ গ্রাহক। বর্তমানে মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড মিলে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন ১৩ কোটির বেশি গ্রাহক।
 
আইএসপিএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, ‘মোবাইল অপারেটরদের কোয়ালিটি অব সার্ভিস দিন দিন পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে সবাই আবার ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে ফিরে আসছে।’

ইত্তেফাক/কেএইচ