শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আদা রসুনের উত্তাপ না কমতেই ডিম-আলুর বাজার লাগামহীন

আপডেট : ২৮ জুন ২০১৯, ১৯:৪৯

এখনো বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আদা, রসুন। সেই উত্তাপ না কমতেই এক সপ্তাহের ব্যবধানে এবার ডিমের বাজার লাগামহীন। এই তালিকায় রয়েছে আলুও।
 
শুক্রবার রাজধানীর কাওরানবাজার ও শান্তিনগরসহ কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দামের এ চিত্র পাওয়া যায়। শুক্রবার বাজারে প্রতি হালি ফার্মের ডিম বিক্রি হয় ৩৬ থেকে ৩৮ টাকায়। যা গত দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৩০ থেকে ৩২ টাকা। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের ( টিসিবি) হিসেবে গত বছর এই সময় প্রতি হালি ডিমের দাম ছিল ২৪ থেকে ২৮ টাকা। সংস্থাটির হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে প্রতি হালি ডিমের দাম বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ। 

শান্তিনগর বাজারের ডিম বিক্রেতা আমিনুল বলেন, আমরা চাহিদা মতো ডিম পাচ্ছি না। রমজানের সময়ও বাজারে ডিমের ব্যাপক আমদানি ছিল। কিন্তু এখন কম। ফলে ডিমের দাম বেড়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও গাজীপুরের ইউনাইটেড এগ্রো কমপ্লেক্সের সত্ত্বাধীকারী খন্দকার মো. মোহসিন ইত্তেফাককে বলেন, রমজানের পর খামারের মুরগী এক ধরনের ভাইরাসজনিত জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। এর ফলে খামারের উৎপাদন কমে গেছে। ফলে দাম বেড়েছে ডিমের। 

তিনি বলেন, রমজানের সময় খামারের উৎপাদন যথেষ্ট ভালো ছিল। ফলে এ সময় ডিমের দামও ছিল কম। তবে ভাইরাসজনিত এই জ্বরের প্রকোপ থেকে খামারগুলো রক্ষা পেলে ডিমের উৎপাদন আবার আগের অবস্থায় চলে আসবে। তখন ডিমের দাম কমে যাবে।

ডিমের পাশাপাশি দাম বেড়েছে আলুর। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি আলু দাম বেড়েছে ২ থেকে ৫ টাকা। শুক্রবার বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয় ২০ থেকে ২৫ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮ থেকে ২০ টাকা। 

দাম বেড়েছে আমদানিকৃত পেঁয়াজের। কেজিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকায়।
এদিকে এখনো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আদা, রসুন। টিসিবির দৈনন্দিন বাজারদরের প্রতিবেদনেও শুক্রবার আদা মানভেদে ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা ও রসুন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হয় বলে তুলে ধরা হয়েছে। অথচ রমজানের ঈদের আগে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আদার দাম ছিল মানভেদে ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা। আর প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। এ ব্যাপারে গত ১৮ জুন সচিবালয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক হলেও এখনো কমেনি আদা, রসুনের দাম।

আরো পড়ুন: ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা আমরণ অনশনে

বাবুবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ইত্তেফাককে বলেন, চাহিদার তুলনায় আদার সরবরাহ কম। তাই দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, দেশে এবার আদার উৎপাদন কম হয়েছে। এছাড়া ভারত, চীন ও মিয়ানমারেও আদার উৎপাদন কম হয়েছে। আর এসব দেশ থেকেই মূলত আদা আমদানি করা হয়। ফলে আদার দাম বাড়তি।

তবে সবজির বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে বেগুন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কচুর লতি, বরবটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পটল ২৫ থেকে ৩০ টাকা, করল্লা ও কাকরোল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
 
শুক্রবার বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাছের মধ্যে ইলিশ ৬০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, রুই, কাতল ২৮০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, পাঙাশ ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, পাবদা আকারভেদে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, শিং ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, টেংরা সাড়ে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, চিতল আকারভেদে ৪০০ থেকে সাড়ে ৬’শ টাকা, চিংড়ী ৫০০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। 

আর মাংসের মধ্যে দাম কমেছে ব্রয়লার মুরগীর। কেজিতে ৫ টাকা কমে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগী বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা, গরুর মাংস ৫২৫ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। 

ইত্তেফাক/এমআই