শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ফাইনালে মুখোমুখি ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড

ফাইনালে ইংল্যান্ড, ক্রিকেট পাচ্ছে নতুন চ্যাম্পিয়ন

আপডেট : ১২ জুলাই ২০১৯, ১১:০৪

একসময় মনে হয়েছিলো এবার বুঝি বৃষ্টিতেই ডুবলো ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বিশ্বকাপ। হবেই বা না কেন? লিগপর্বের শুরুর দিকেই রেকর্ড চারটি ম্যাচ বৃষ্টিতে তলিয়ে যায়। শেষ দিকে এসে দেখা যায় বৃষ্টিই পয়েন্ট টেবিলের লড়াইটা নাটকীয় করে তুলেছে! দ্বিতীয় সেমিফাইনাল শেষে একটা সত্য নিশ্চিত যে, এবারের বিশ্বকাপটা সত্যিই অনন্য এক বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে। পাঁচ আসর পর নতুন চ্যাম্পিয়ন পাচ্ছে ক্রিকেট।

আজ বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ডের বার্মিহ্যামে অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে তিনবারের রানারআপ ইংল্যান্ড। অন্যদিকে শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করেছে গত আসরের রানারআপরা। দুটি দলের যেই জিতুক ক্রিকেট পাবে নতুন চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ১৯৯৬ সালে সর্বশেষ নতুন চ্যাম্পিয়ন হয় শ্রীলঙ্কা। এরপর পাঁচ আসরের চারটি যায় পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার ঘরে। মাঝে ২০১১ সালে নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয় করে ভারত। এতে ক্রমেই একঘেঁয়ে হয়ে উঠছিলো বিশ্বের অন্যতম সেরা এই আসর।

টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। এই সিদ্ধান্তটাই হয়তবা কাল হলো লিগপর্বে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে থাকা দলটির। বলতে গেলে, প্রথম ৭ ওভারেই হেরে গেছে অস্ট্রেলিয়া! এই সময় অস্ট্রেলিয়ার দলীয় স্কোর ১৫/৩। এখান থেকে ৮৫ রানের দায়িত্বশীল এক ইনিংস খেলে দলকে ২২৩ রান এনে দিতে সক্ষম হন দলটির সাবেক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। তবে তা দিয়ে লড়াইয়ের মঞ্চ তৈরি করতে সম্পূর্ণ রূপে ব্যর্থ হন মিশেল স্টার্ক-পেট কামিন্সরা। আট উইকেট ও ১০৭ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে ইংল্যান্ড।

২২৪ রানে সহজ লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইংল্যান্ডের প্রথম উইকেটের পতন হয় ১২৪ রানে। ব্যক্তিগত ৩৪ রানে স্টার্কের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন ধীরগতিতে খেলতে থাকা জনি বেয়ারস্টো। অন্যপ্রান্তে তখন ঝড়ো গতিতে খেলছেন আরেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান জেসন রয়। ১২৪ রানের মধ্যে ৭৯ তার। এরপর জেসন রয়ের সঙ্গে যোগ দিয়ে আরো আগ্রাসী হয়ে ওঠেন জো রুট। দলীয় ১৪৭ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৮৪ রানে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের শিকার হন জেসন রয়। এরপর ইয়ন মরগ্যান ও জো রুট দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। জফরা আর্চারের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন অ্যারন ফিঞ্চ। এদিন রানের খাতা খুলতেও ব্যর্থ হন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক। দলীয় ১০ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৯ রানে ওকসের বলে জনি বেয়ারস্টোর হাতে ক্যাচ দেন ডেভিড ওয়ার্নার। মাত্র এক রানের জন্য বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের জায়গাটি পুনরুদ্ধার করতে ব্যর্থ হন আসরের অন্যতম সফল এই ব্যাটসম্যান। ১০ ম্যাচ শেষে তার ব্যক্তিগত সংগ্রহ দাঁড়ালো ৬৪৭ রান। এক রান বেশি নিয়ে এই তালিকার শীর্ষে ভারতের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা। দলীয় স্কোরে চার রান যোগ করে হ্যান্ডসকম্বও ফিরলে চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া।

এরপর ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন দলটির সাবেক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। এলেক্স ক্যারিকে সঙ্গে নিয়ে ১০৩ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক চাপ থেকে দলকে উদ্ধার করেন ভালোভাবেই। দলীয় ১১৭ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪৬ রানে আদিল রশিদের শিকার হন ক্যারি। এই ওভারেই স্টোইনিসকে ফিরে অস্ট্রেলিয়াকে খাদের কিনারায় ঠেলে দেন আদিল রশিদ। তখনো অবশ্য দলের হাল শক্ত করেই ধরে রাখেন স্মিথ। দলীয় ২১৭ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৮৫ রানে স্মিথ আউট হলে অস্ট্রেলিয়ার পথ সংকুচিত হয়ে আসে। শেষ পর্যন্ত সব উইকেট হারিয়ে দলটির সংগ্রহ ২২৩ রান।

আগামী রবিবার বিখ্যাত লর্ডসে ফাইনালে মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড।