ব্যবহৃত চা পাতা ও মাছের বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদনে প্রথমবারের মতো সফল হয়েছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি)। এছাড়া ব্যবহৃত চা, মাছ ও গবাদিপশুর বর্জ্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বায়োগ্যাস উৎপাদনের পাশাপাশি এগুলো সার হিসেবে ব্যবহারের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল।
গবেষণায় দেখা যায়, ভিন্ন ভিন্ন অনুপাতে মাছ, চা ও গরুর সমন্বিত বর্জ্য হতে ৭২ মিলি. এবং ৪৫ মিলি। গরু ও চায়ের সমন্বিত বর্জ্য থেকে ৩৫ মিলি এবং গরু ও মাছের সমন্বিত বর্জ্য হতে ৬৫ মিলি বায়োগ্যাস বা মিথেন পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশেদ আল মামুন, শিক্ষার্থী শঙ্খরূপা দে এবং জিনাত জাহান এই সাফল্যের নায়ক।
তারা বলেন, বিশ্বে দিনে দিনে জীবাশ্ম জ্বালানির চাহিদা বাড়লেও পাল্লা দিয়ে কমছে তার মজুদ ও উৎস। তাই বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিতকরণে নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে বায়োগ্যাস উন্নত বিশ্বে এখন বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্জ্য ভেদে বায়োগ্যাস থেকে ৬০-৬৫% মিথেন গ্যাস পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: আগামী বছরেই ভাঙ্গা অঞ্চল শতভাগ বিদ্যুতায়িত হবে: নিক্সন চৌধুরী
তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রতিদিন ব্যাপক পরিমাণ চা, মাছ ও গবাদিপশুর বর্জ্য তৈরি হয়-যা সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে পরিবেশের উপর নানাবিধ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। অথচ এই বর্জ্য পঁচে প্রচুর পরিমাণে মিথেন গ্যাস নির্গত হয়। আর এই গ্যাস গ্রিনহাউজ গ্যাস হিসেবে কার্বন ডাই অক্সাইড এর চেয়ে ২৫ গুন বেশি ক্ষতিকর। অথচ মাছের বর্জ্য, চায়ের বর্জ্য ও গোবর মিশিয়ে ৬৫ % নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন করা সম্ভব বলে জানিয়েছে সিকৃবির গবেষকদল।
তাছাড়া জ্বালানি উৎপাদনের পর অপচ্য বর্জ্য থেকে সার ও মাছের খাবার উৎপন্ন হয়। এটিও আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত লাভজনক। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বৃহৎ পরিসরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হলে বাংলাদেশে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে নতুন দিগন্তের সূচনা করা সম্ভব হবে বলে তারা মনে করেন।
ইত্তেফাক/এএএম