শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শ্রমজীবীদের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ মহার্ঘ ভাতার ব্যবস্থা করুন

আপডেট : ২৮ জুন ২০২১, ২০:৫২

প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে বিলেসর সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা

 ইত্তেফাক রিপোর্ট

২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে শ্রমজীবী মানুষের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিল্স। নেতৃবৃন্দ শ্রমজীবী মানুষের একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেস তৈরির জন্য সুনির্দিষ্ট বাজেট পরিকল্পনা ও প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ মহার্ঘ ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা, একটি সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রণয়ন, শ্রমিকের পুনঃকর্মসংস্থান এবং শ্রমিকদের টিকা দেওয়ার জন্য একটি সম্পূর্ণ বাজেট পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। গতকাল ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর বিলসের সুপারিশমালা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। বিল্স সেমিনার হলে ভার্চুয়ালি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিল্স।

বিল্স উপপরিচালক (গবেষণা) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, করোনাকালে শ্রমিক ও শ্রমজীবী মানুষের জন্য বিভিন্ন দাবি থাকলেও প্রস্তাবিত বাজেটে তা উপেক্ষিত রয়ে গেছে। তিনি বলেন, বর্তমানে কোভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ঢেউ সর্বোচ্চ পর্যায় চলছে। অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক উভয় ধরনের চলাচলে বিধিনিষেধ রয়েছে। ইতিমধ্যে ১২৮৪৪১ কোটি টাকার ২৩টি পুনরুদ্ধার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, যা জিডিপির প্রায় ৪.২ শতাংশ। সাম্প্রতিক সময়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধিও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.১ শতাংশ। তারপরও কোভিডের কারণে শ্রমিকের আয় কমেছে। অনেক শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। তারা সঞ্চিত অর্থ ব্যয় করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন। অনেক শ্রমিক চাকরি নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। অন্যদিকে বিদেশে শ্রম অভিবাসনও উল্লেখযোগ্য হারে কমে বছরে মাত্র ২ লাখ জনে দাঁড়িয়েছে, বিগত বছরগুলোতে যা গড়ে প্রায় ৮ লাখ জন ছিল। এর মধ্যে কোভিডের কারণে বিগত কয়েক মাসে অনেক অভিবাসী শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছেন।

স্বাগত বক্তব্যে বিল্স মহাসচিব ও নির্বাহী পরিচালক নজরুল ইসলাম খান বলেন, কোভিডের কারণে চাকরি হারিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের বহু শ্রমিক বেকার হয়ে গেছে, তাদের সহায়তায় সামাজিক সুরক্ষাসহ অন্য বিষয়গুলো বাজেটে থাকা উচিত। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে কর্মসংস্থানের নিরাপত্তা, উত্পাদনশীল কর্মসংস্থান, শ্রমিকের সামাজিক নিরাপত্তাসহ বাজেট প্রক্রিয়ায় শ্রমিক প্রতিনিধির অংশগ্রহণের বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছে। যেসব অভিবাসী শ্রমিক দেশে ফেরত এসেছেন তাদের কর্মসংস্থান বিষয়েও বাজেটে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। যতদিন পর্যন্ত তারা কাজে যোগদান করতে না পারছে তাদের সরকারিভাবে সহায়তা দেওয়া উচিত এবং তাদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দক্ষতা উন্নয়নের বিষয়টিতে আরো গুরুত্বারোপ করা দরকার ।

সভাপতির বক্তব্যে বিল্স উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য নইমুল আহসান জুয়েল বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট শ্রমিকবান্ধব নয়, এটি ব্যবসাবান্ধব বাজেট। তার পরও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য বাজেটে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও বরাদ্দ নেই। কোভিডের কারণে কয়েক লাখ শ্রমিকের অবস্থান দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। ডাটাবেস না থাকার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের দেওয়া অর্থ সহয়তা দেওয়া যায়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি শ্রমিকদের সহায়তার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেস থাকার দরকার বলে গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি শ্রমিকের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে বিলেসর সুপারিশ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহের প্রতি আহ্বান জানান।