ইউরোপিয়ান জায়ান্ট ক্লাব বার্সেলোনা আরেকটি ঘটনাবহুল সপ্তাহ কাটাচ্ছে। তবে এবার মাঠের ঘটনার চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনা নিয়েই হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্লাব কর্তৃপক্ষকে। নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষায় একটি জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানকে অনৈতিক কাজে ব্যবহার করার কারণে ক্লাবটির অন্দরমহলে এখন ক্ষোভের আগুন জ্বলছে।
এমন সময়ে আবারও দৃশ্যপটে হাজির হলেন সভাপতি জোসেফ মারিয়া বার্তেমিউ। মঙ্গলবারই ক্লাবের মূল দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বার্তেমিউ। শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম মার্কার করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে ক্লাবের অবস্থান খেলোয়াড়দের জানিয়েছেন বার্তেমিউ। এই বার্তেমিউর বিরুদ্ধেই সবচেয়ে বেশি অভিযোগ।
‘আইথ্রি ভেঞ্চারস’ নামের জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কাজ হলো বার্সেলোনা সভাপতির একটা পরিষ্কার ভাবমূর্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরা। এখানেই শেষ নয়, এই প্রতিষ্ঠানটিকে প্রয়োজনে নিজের খেলোয়াড়, সাবেক খেলোয়াড় কিংবা প্রতিপক্ষের সমালোচনার জন্য একটা মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবেও ব্যবহার করে আসছে বার্সেলোনা।
শতাধিক ‘নকল’ টুইটার ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে কার্যসিদ্ধি করে এই প্রতিষ্ঠান। কাতালান ক্লাবটির নির্দেশেই তারা এসব অ্যাকাউন্ট দিয়ে প্রয়োজনে কখনো বার্তেমিউকে নায়ক বানায়, কখনো অন্য কাউকে বানায় খলনায়ক। জানা গেছে, এই অ্যাকাউন্টগুলো থেকে মেসি, জাভি, জোর্ড পিকে, পেপ গার্দিওলা, কার্লোস পুয়োল, হুয়ান লাপোর্তার মতো শীর্ষস্থানীয় ক্লাব সংশ্লিষ্টদের অতীতে আক্রমণ করা হয়েছে। বার্তেমিউ ও তার ক্লাবের ভাবমূর্তি রক্ষার এই চুক্তিতে বার্সেলোনাকে প্রায় ১ মিলিয়ন ইউরো ব্যয় করতে হয়েছে। আর এই প্রতিষ্ঠানটি কাজ করছে সেই ২০১৭ সাল থেকে। কাতালান ক্লাবটির কর্তৃপক্ষ অবশ্য সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে।
খেলোয়াড়দের সঙ্গে ক্লাব সভাপতির বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা। এর মধ্যে ছিলেন এরিক আবিদাল, গিলোর্মো আমোর ও র্যামেন প্লেনস। ছিলেন কোচ কিকে সেতিয়েন্সও।
খেলার মাঠেও এই মুহূর্তে শক্ত অবস্থানে নেই বার্সেলোনা। সুপার কোপা ও কোপা দেল রে’র থেকে এরই মধ্যে ছিটকে গেছেন মেসিরা। লা লিগাতেও শক্ত অবস্থানে নেই সেতিয়েনের শিষ্যরা। এর চেয়েও বড়ো ব্যাপার সাম্প্রতিক সময়ে ক্লাবের ওপর থেকে মন উঠে যেতে শুরু করেছে স্বয়ং লিওনেল মেসির।
আরো পড়ুন : গ্রামীণফোনের ১০০ কোটি টাকা নেয়নি বিটিআরসি
এরিক আবিদালের সঙ্গে টানাপোড়েনের রেশ শেষ হতে না হতেই এই নতুন কেলেঙ্কারির খবর ফাঁস হতেই নতুন করে চোখ খুলে গেছে মেসির। ঐ জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানটি বার্সেলোনার নির্দেশেই নিজেদের ফেক অ্যাকাউন্টগুলো ব্যবহার করে মেসি ও তার পরিবারকে আক্রমণ করেছে। এমন অবস্থায় মেসি আর কদিন বার্সেলোনার শিকড় আঁকড়ে থাকেন এখন সেটাই দেখার বিষয়।
ইত্তেফাক/ইউবি