শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বড়াইগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা হত্যা মামলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড

আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:২১

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি ও সাবেক মাঝগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ডা. আয়নাল হক হত্যা মামলার রায়ে বিএনপি নেতা তোরাব আলী ও শামীম কায়সারকে মৃত্যুদণ্ড এবং প্রত্যেককে ১০ হাজার এক টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার ১১ জন আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে। 

এছাড়া মামলার প্রধান অভিযুক্ত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ একরামুল আলমসহ চার আসামি ইতিপূর্বেই মারা যাওয়ায় মামলা থেকে তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সোমবার জনাকীর্ণ আদালতে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান সিদ্দিক বহুল আলোচিত এ হত্যা মামলার রায় দেন।

মামলার রায়ে বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষই অসন্তোষ প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তোরাব আলী উপজেলার মহিষভাঙ্গা গ্রামের বাহার উদ্দিন মোল্লার ছেলে এবং শামীম কায়সার একই গ্রামের পলান মোল্লার ছেলে। তারা দুজনেই বনপাড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। 

মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী নাটোর জজ কোর্টের পিপি সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০০২ সালের ২৮ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বনপাড়া হীরামন সিনেমা হলের সামনে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আব্দুল আলিম মোল্লাকে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। এর পরপরই বিএনপি নেতা-কর্মীরা বনপাড়া বাজারে ডা. আয়নাল হকের চেম্বারে হামলা করে। এ সময় তাকে টেনে হিঁচড়ে চেম্বার থেকে বের করে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে তারা। একই সঙ্গে তারা মহিষভাঙ্গা গ্রামের আয়নাল হকের বাড়িসহ প্রায় ৫০টি বাড়িতে হামলা-ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে আহত আয়নাল হকের স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ৩১ মার্চ নিহতের পুত্রবধূ বর্তমান পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেনের স্ত্রী নাজমা বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ১৫ জনের নামে চার্জশিট দেয়। আদালত বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে মোট ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়ে অবশেষে দেড় যুগ পর সোমবার এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। 

আরও পড়ুন: চাল আত্মসাতের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত

মামলার রায় ঘোষণার পর নিহতের বড় ছেলে বনপাড়া পৌর মেয়র অধ্যাপক কেএম জাকির হোসেন অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমরা দ্রুত অপর আসামিদের খালাস প্রদানের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।’ 

অপরদিকে, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চু জানান, এটি একটি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট নই। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করবো।

ইত্তেফাক/এএএম