শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিদ্যুৎ সংযোগের অভাব

এক বছরেও চালু হয়নি পাবনা মেডিক্যালের সিটি স্ক্যান মেশিন 

আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২০, ১৬:৪৬

পাবনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কাম পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সিটি স্ক্যান মেশিন স্থাপনের পর প্রায় এক বছর হতে চললো, এখনো চালু করা যায়নি। এ বছরের জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে মেশিন বসানো হয়।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, শুধুমাত্র বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে অত্যাধুনিক এ মেশিনটি রোগীদের কোনো কাজে আসছে না। মূল্যবান যন্ত্রটি অচল অবস্থায় পড়ে থাকায় উচ্চ ব্যয়ে রোগীদের বাধ্য হয়ে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে সিটি স্ক্যান করাতে হচ্ছে।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের প্রধান অফিস সহায়ক মো. রুহুল আমিন বৃহষ্পতিবার ইত্তেফাককে বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ প্রায় দুই কোটি টাকা দামের অত্যাধুনিক সিটি স্ক্যান মেশিনটি পাবনা জেনারেল হাসপাতালে বরাদ্দ দিয়েছে। তোশিবা-১৬০ মডেলের এই মেশিনটি গত জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বসানো হয়। নিচতলায় এক্সরে বিভাগের পাশের  কক্ষে এটি স্থাপন করা হয়েছে। মেশিনটি চালানোর জন্য একজন টেশনিশিয়ানকেও পদায়ন করা হয়েছে। শুধু বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় মেশিনটি পড়ে আছে। 

তিনি জানান, হাসপাতালে ২২০ ভোল্টের বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। কিন্তু এই মেশিন চালানোর জন্য ৪৪০ ভোল্টের বিদ্যুৎ সংযোগ প্রয়োজন।

এদিকে হাসপাতালে সিটি স্ক্যান বিভাগ ঘুরে দেখা গেছে, রোগীরা সেবা না পেলেও সচল রাখার স্বার্থে প্রতিদিন ব্যাটারি চার্জ করে মেশিনটি চালু করা হয়। এই ঘরের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রগুলোও সচল রাখতে হয়।

সিটি স্ক্যান মেশিন পরিচালনার কাজে নিয়োজিত টেশনিশিয়ান মো. কহিদুল ইসলাম বললেন, মেশিনটি সচল রাখতে প্রতিদিন মেশিন চালু করতে হয়। হাই-ভোল্টেজ বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায়, হাই-ভোল্টেজ ব্যাটারি চার্জ করেও প্রতিদিন মেশিনটি চালু করতে হয়। এছাড়া মেশিন কক্ষে সার্বক্ষণিক এসি চালাতে হচ্ছে। এতে অপ্রয়োজনে হাসপাতালের  খরচ বাড়ছে।

পাবনা শহরের কৃঞ্চপুর মহল্লার বাসিন্দা রিজভি জয় বলেন, কয়েকমাস আগে তার চাচাকে গুরুতর অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার পর সিটি স্ক্যানের সুযোগ না থাকায় তাকে বেসরকারি হাসপাতালে নিতে হয়। তাকে বাঁচানো যায়নি। 

মধ্য শহরের দিলালপুর মহল্লার মাহমুদা পারভিন বললেন, তার মাকে কয়দিন আগে ভর্তি করা হয়। সিটি স্ক্যানের প্রয়োজন হলে বাইরের বেসরকারি হাসপাতালে করান হয়। তিনি বেঁচে নেই।

আরো পড়ুন: কামারখন্দে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আইয়ুব হোসেন বলেন, তিনি এখানে কয়দিন হলো যোগ দিয়েছেন। তিনি শুনেছেন, গণপূর্ত বিভাগ আর বিদ্যুৎ বিভাগের উদাসীনতায় সিটি স্ক্যান মেশিনটি চালু করা যাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে পাবনা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিম বলেন, ৪৪০ ভোল্টের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপনের জন্য হাসপাতালে ইতিমধ্যে পাওয়ার সাব-স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। সাব-স্টেশন নির্মাণের সব কাজ শেষ হয়েছে এখন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে কাজ করতে হবে। সংযোগের জন্য নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানিকে টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তারা বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপন করলেই হাসপাতালে সংযোগ প্রদান করা হবে। স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ইত্তেফাক/এএএম