বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সীতাকুণ্ডে পুলিশ ও জেলেদের সংঘর্ষ, আতংকে এক নারীর মৃত্যু

আপডেট : ২১ মে ২০১৯, ১৮:১১

সীতাকুণ্ডে কুমিরা ঘাটঘর জেলে পাড়ায় এক যুবক গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে জেলেদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশী তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড ওই জেলে পাড়া এখন পুরুষ শূন্য। এ সময় আতংকিত হয়ে এক নারী মারা গেছেন। এ ঘটনায় পুলিশসহ আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। 

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২০ মে) রাত সাড়ে ১১টায় কুমিরা ঘাটঘর জেলে পাড়া এলাকায় পুলিশ রুবেল দাশ নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় জেলে পাড়ার লোকজন এগিয়ে এসে গ্রেফতারের কারণ জানতে চাইলে পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে পুলিশ ও জেলেদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় বেলাম্বু দাশ (৫৮) নামে এক বৃদ্ধা আতংকে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। 

উত্তেজিত জেলে সম্প্রদায়ের লোকজন পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করে। নিহতের ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আশেপাশের আরও জেলে সম্প্রদায়ের লোকজন এসে বিক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশদের ঘিরে ফেলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেলে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে বিক্ষুব্ধ জেলেদের ওপর লাঠিচার্জ, ফাঁকা গুলি ও রাবার বুলেট ছোড়ে। 

রুবেলের পিতা রবিন্দ্র দাশ ও নিহত নারীর স্বামী সন্ধ্যা জলদাশ জানান, পুলিশ রুবেলকে তুলে নিয়ে যেতে চাইলে কারণ জিজ্ঞেস করা হয়। এতে পুলিশ ক্ষুব্ধ হয়ে জেলে সম্প্রদায়ের ওপর লাঠিচার্জ করে।

জেলে সম্প্রদায়ের সর্দার নতুন দাশ জানান, পুলিশ জেলেদের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও নারীদের মারধরসহ শ্লীলতাহানি করেছে। পুলিশ রত্না দাশ (১৮) নামের এক মেয়েকে পাজা কোলা করে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেছে। 

জেলে সম্প্রদায় আরও জানায়, পুলিশ প্রায়ই জেলে পাড়ায় গিয়ে ২/৩ জন নিরপরাধ ছেলেদেরকে ধরে ১০/২০ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। এভাবে প্রায় তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। বর্তমানে ওই এলাকায় জনগণের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। 

আরও পড়ুন: অবসরের পর চিত্রশিল্পী হবেন ধোনি!

কুমিরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. মোরশেদ হোসেন জানান, পুলিশ ইয়াবা ব্যবসায়ীকে ধরতে গেছে শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে জেলেদেরকে শান্ত করতে না পেরে চলে আসি। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।  

এ ব্যাপারে মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. দেলওয়ার হোসেন বলেন, ঘাটঘর এলাকাটি একটি ইয়াবার টার্নিং পয়েন্ট। এলাকাটি দীর্ঘদিন থেকে আমাদের নজরে আছে। গোপনে সংবাদ পেয়ে ওই এলাকায় হাতেনাতে একজনকে ধরলে তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা পুলিশের উপর হামলা চালালে পুলিশও আত্মরক্ষায় লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

ইত্তেফাক/অনি