বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

চীনবিরোধী বিক্ষোভের পর থমথমে হংকং

আপডেট : ১৪ জুন ২০১৯, ০৮:৩১

বহিঃসমর্পণ বিল নিয়ে বিক্ষোভের ধারাবাহিকতায় হংকংয়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কিছু সরকারি দপ্তর। চলমান বিক্ষোভের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকালে সরকারি দপ্তরগুলোর সামনে অবস্থান নিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। পালটা ব্যবস্থা হিসেবে নিরাপত্তা জোরদার করেছে কর্তৃপক্ষ। মূলত চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে অপরাধী প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত একটি বিলের বিপক্ষে এই বিক্ষোভ হচ্ছে। তবে বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু হংকংয়ের ওপর চীনের নিয়ন্ত্রণ। খবর বিবিসির। 

হংকংয়ের বেইজিংপন্থি শাসকদের প্রস্তাবিত একটি বিলে সন্দেহভাজন অপরাধীকে চীন ও তাইওয়ানে ফেরত পাঠানোর পথ সুগম করা হয়েছে। তবে বেইজিংয়ের দুর্বল আইন এবং মানবাধিকার রেকর্ডের কারণে সেখানে কাউকে ফেরত পাঠানো নিরাপদ মনে করছেন না হংকংয়ের সাধারণ মানুষ। তারা মনে করছেন, বিলটি পাস হলে তা হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চীনের হস্তক্ষেপের সুযোগ বাড়িয়ে দেবে। সেখান থেকেই বিক্ষোভে নেমেছে তারা।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেও তারা অবস্থান নিতে শুরু করেন। কয়েকশ আন্দোলনকারী মুখোশ ও খাবার নিয়ে দেশটির আইনসভার সামনে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। তবে এদিন নিরাপত্তা আরো জোরদার করেছে হংকং। হেলমেট ও ঢাল নিয়ে সেখানে প্রস্তুত শত শত পুলিশ। পাশেই পুলিশ ভ্যান। এছাড়া ইউনিফর্মবিহীন পুলিশও রয়েছে। চেক করা হচ্ছে সকলের পরিচয়পত্রও।

এর আগে বুধবার দিনভর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন্দোলনকারীদের ওপর রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। আন্দোলনকারীরাও প্লাস্টিকের বোতল ছুড়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করে।

১৯৯৭ সালে চীনের কাছে ব্রিটেন হংকং পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়ার পর থেকে দেশটিতে এমন সহিংসতা হয়নি। দেশটির হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার রাত ১০টা পর্যন্ত অন্তত ৭২ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করলেও সরকার পিছু হটেনি। হংকংয়ের আইনি পরিষদ বিতর্কিত ঐ অপরাধী প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত বিলটি নিয়ে দ্বিতীয় বৈঠক পিছিয়ে দিয়েছে। সেই বৈঠক কবে অনুষ্ঠিত হবে তা নিয়েও স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি।

২০১৮ সালের এক ঘটনার প্রেক্ষিতে এই বিলটি তৈরি করা হয়। তাইওয়ানে ছুটি কাটানোর সময় অন্তঃসত্ত্বা বান্ধবীকে হত্যার অভিযোগ ওঠে হংকংয়ের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। কিন্তু তাইওয়ানের সঙ্গে হংকংয়ের বন্দিবিনিময়ের কোনো চুক্তি না থাকায় সেই ব্যক্তিকে এখন তাইপেতে বিচারের জন্য পাঠানো যাচ্ছে না। কিন্তু এখন তাইওয়ানও জানিয়েছে, সন্দেহভাজন সেই খুনের মামলার আসামিকে ফেরত নিতে চায় না তারা। কেননা, এটি এমন এক উদাহরণ তৈরি করবে, যা চীন ভবিষ্যতে কাজে লাগাতে পারে।

ইত্তেফাক/এসআর