অনলাইনে সেমিনার
ইত্তেফাক রিপোর্ট
উপকূলীয় অঞ্চলের বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে বছরে অন্তত ১২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হবে বলে জানিয়েছেন বক্তারা। তারা বলেছেন, স্থানীয় সরকার সেই বেড়িবাঁধ নির্মাণের নেতৃত্ব দেবে ও বাজেট বরাদ্দ করবে। কুতুবদিয়া ও কয়রার মতো অধিক ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে অনতিবিলম্বে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। বিচ্ছিন্ন চরগুলো, যেখানে দরিদ্র মানুষের বসবাস বেশি, সেখানে ভবিষ্যতে বাঁধ নির্মাণের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে।
গতকাল শনিবার ‘জাতীয় বাজেট ২০২০-২১ :বেড়িবাঁধ ও উপকূলের মানুষের সুরক্ষা’ শীর্ষক অনলাইন সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। কোস্ট ট্রাস্ট ও সিএসআরএল (ক্যাম্পেইন ফর সাসটেইনেবল রুরাল লাইভলিহুড) যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে পিকেএসএফ-এর চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ সরকারকে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণে অগ্রাধিকারের পরামর্শ দিয়ে বলেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণ দুর্নীতি মুক্ত রাখতে হবে এবং এজন্য এতে স্থানীয় সরকারকে দায়িত্ব দিতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি বলেন, সাইক্লোন আম্ফানের পূর্বে প্রস্তুতি ভালো হওয়ায় আমরা প্রাণহানি এড়াতে পেরেছি। কিন্তু এসব এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও তার স্থায়িত্বশীল সংরক্ষণের জন্য আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খুলনার সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান বাবু বলেন, সাইক্লোন আইলার পর থেকেই খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের যথাযথ নকশা অবলম্বন করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করায় পুরো অঞ্চল এখন অরক্ষিত। এসব জায়গায় জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।
মূল বক্তব্যে কোস্ট ট্রাস্টের আরিফ দেওয়ান বলেন, এই বাজেটে উপকূলের বেড়িবাঁধের জন্য বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি পায়নি, যা উপকূলে মানুষের প্রাণ ও তাদের ফসল রক্ষার মাধ্যমে দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চলের অর্থনীতি এগিয়ে নিতে পারত। ফলে উপকূলে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমরা এক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার মডেল অনুসরণ করতে পারি। বেড়িবাঁধের উভয় পাশে বনায়ন গড়ে তোলা, যাতে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়।
স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি ও অন্যান্য বক্তারা বলেন, উপকূলকে জলবায়ু সহনশীল করার জন্য বেড়িবাঁধকেন্দ্রিক আর্থ-সামাজিক কর্মসূচি হাতে নিতে হবে যেমন- লবণাক্ততা ব্যবস্থাপনা, যথাযথ নাব্যতা বজায় রাখা, বাঁধের উভয় পাশে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাঁধ সংরক্ষণের পরিকল্পনা।