মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ১৪ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালিত 

আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২১, ১১:২০

বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালিত হয়েছে। জাতির পিতা বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। ৭ মার্চ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন।  এ ভাষণ এখনো অনুপ্রেরণা জোগায়। 

নয়াদিল্লি
নয়াদিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন যথাযোগ্য মর্যাদায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ভাষণ দিবস কর্মসূচি পালন করেছে। এ উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মোহাম্মদ ইমরান জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। তারপর তিনি দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং আগত অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অনুষ্ঠানে হাই কমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক এই ভাষণটি ছিল একটি পরাধীন জাতির মুক্তির দিকনির্দেশনামূলক, অনুপ্রেরণাদায়ক বক্তব্য। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের নির্দেশনা থেকেই মুক্তিপাগল বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং চূড়ান্তভাবে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।   অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। দূতাবাসে সন্ধ্যার অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক, স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ও বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। এ সময়ে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করেন। 

ভিয়েতনাম

ভিয়েতনামের হ্যানয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ, দোয়া ও মোনাজাত, আলোচনা এবং ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের মাধ্যমে ৭ মার্চ পালন করা হয়। আলোচনাপর্বে রাষ্ট্রদূত মিজ সামিনা নাজ বক্তব্য রাখেন। পরে ৭ মার্চের ভাষণের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী, ভাষণের কপি আগত অতিথিদের মধ্যে বিতরণ এবং আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে ধন্যবাদ ও আপ্যায়নের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয় ।  এছাড়া বাংলাদেশ দূতাবাস বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চ ভাষণের ভিয়েতনামী অনুবাদের কাজে হাত দিয়েছে। 

সিঙ্গাপুর

সিঙ্গাপুরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। পরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার তৌহিদুল ইসলাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বাণী পড়ে শোনানো হয়। তাছাড়া জাতির পিতার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের উপরে নির্মিত বিশেষ ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া ‘ভয়েস অব মিলিয়নস্’ শিরোনামে একটি বিশেষ ওয়েবইনার আয়োজন করে। ওয়েবইনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক  চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য তুলে ধরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত ভারত ও মালদ্বীপের হাইকমিশনারগণও আলোচনায় অংশ নেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার তৌহিদুল ইসলাম।


 

দুবাই 
যথাযথ মর্যাদায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের উদ্যোগে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালিত হয়েছে। রবিবার সকালে প্রথমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। দুবাই নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো: ইকবাল হোসাইন খানের  সভাপতিত্বে দিনটির উপর গুরুত্বারোপ করে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন কমার্শিয়াল কাউন্সেলর কামরুল হাসান, প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন লেবার কাউন্সেলর ফাতেমা জাহান। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ডেপুটি কনসাল জেনারেল মো: সাহেদুল ইসলাম। কাউন্সেলর প্রভাষ লামারং এর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন প্রকৌশলী আবু জাফর চৌধুরী, বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সিনি: সহ-সভাপতি আইয়ুব আলী বাবুল, অধ্যাপক আবদুস সবুর, সাংবাদিক সাইফুর রহমান, আবুল কাশেম সহ কমিউনিটির অনেকেই।  আলোচনা শেষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। 

আবুধাবি 

আবুধাবিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস  বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন করেছে। সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে মিশনের সকল  কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রবাসীদের অংশগ্রহণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। রাষ্ট্রদূত আবু জাফর  দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়ে  জাতির প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর দূতাবাসের মিলনায়তনে রাষ্ট্রদূতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভার শুরুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয় এবং  বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র  প্রদর্শন করা হয়। জাতির পিতার রুহের মাগফিরাত ও দেশের সমৃদ্ধি এবং উন্নয়ন কামনা করে বিশেষ দোয়া-মোনাজাতের মাধ্যমে সভার সমাপ্তি হয়।

নিউইয়র্ক
আজ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ইউনেস্কো’র ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটির সূচনা করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন এবং বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামরা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষন এবং একটি প্রামাণ্য ভিডিও প্রদর্শন করা হয় অনুষ্ঠানটিতে।
আলোচনা পর্বে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। 

 

প্যারিস
যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সাথে বাংলাদেশ দূতাবাস প্যারিস ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস উদযাপন করছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে রবিবার (৭ মার্চ) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন। রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। প্রবাসীদের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে দূতাবাস অনুষ্ঠানটি একইসাথে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে আয়োজন করে। ফ্রান্সে বসবাসরত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অনলাইনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন। রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন তার বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ সমগ্র বাঙ্গালি জাতিকে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করেছিল এবং মুক্তির মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিল ও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তি ও সাহস যুগিয়েছিল। 

 


জার্মানি
জার্মানির রাজধানী বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন করে। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মোঃ মোশাররফ হোসেন এর নেতৃত্বে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও প্রবাসী বাংলাদেশীদের উপস্থিতিতে জাতীয় সংগীত বাজানোর মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর রাষ্ট্রদূত যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। অনুষ্ঠানে সমবেত সকলের উদ্দেশ্যে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে জাতীয় নেতৃবৃন্দের বাণী পাঠ করা হয়। 

অনুষ্ঠানে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ এর গুরুত্ব ও প্রেক্ষাপট, জাতির পিতার জীবন ও কর্ম এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর ভূমিকার ওপর আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, মিজানুর হক খান, নুরজাহান খান নুরি, মাসুদুর রহমান মাসুদ, নুরে আলম সিদ্দিকি রুবেল, শেখ রেদোয়ান সহ আরো অনেকে।



লন্ডন 
বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডন ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন করেছে। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম হাইকমিশন প্রাঙ্গণে মিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচির সূচনা করেন। এরপর মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র বাণী পাঠ করা হয়।

দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

 


ইরান

ইরানস্থ তেহরান বাংলাদেশ দূতাবাস ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন করেছে। রবিবার (৭ মার্চ) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় এই অনুষ্ঠানের সূচনা করেন ইরানে নিযুক্ত বাংলাদেশ দুতাবাসের রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওছল আজম সরকার। রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওছল আজম সরকারের উপস্থাপনায় এই ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে অংশ নেন কবি আসাদ মান্নান, কবি ও বঙ্গবন্ধু-গবেষক সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, ড. জুলিয়া মঈন, সৈয়দ মুসা রেজা, নাসির মাহমুদ প্রমুখ।


স্পেন

স্পেনের মাদ্রিদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন করা হয়েছে। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা করেন দূতাবাসের কাউন্সেলর ও চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এটিএম আব্দুর রউফ মন্ডল। পরে দূতাবাসের সভাকক্ষে দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ৭ মার্চ উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর রেদোয়ান আহমেদ এবং প্রথম সচিব (শ্রম) মুতাসিমুল ইসলাম।
 

ইত্তেফাক/ইউবি/এসসিএস