সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

সন্ধ্যা নামলেই বসে মাদক ও জুয়ার আসর

আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০২১, ২০:৪১

ঈশ্বরদীতে দেড় বছর স্কুল বন্ধ

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সময় দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি। টানা প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকায় ঈশ্বরদীর অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিরাজ করছে ভূতুড়ে পরিবেশ। বিশেষ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলোর অবস্থা জরাজীর্ণ। অফিসের কাজকর্ম ও শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট জমা নেওয়া ছাড়া তেমন কোনো কাজ নেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর। প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির সুযোগে জায়গা দখল করেছে মাদকসেবী ও জুয়াড়িরা।

ঈশ্বরদীর সাঁড়া, পাকশী, সাহাপুর, লক্ষ্মীকুন্ডা, সলিমপুর, দাশুড়িয়া, মুলাডুলির অধিকাংশ বিদ্যালয়ের আশপাশের মানুষ জানান, স্কুল বন্ধ থাকায় স্থানীয় মাদকসেবী ও জুয়াড়িরা সন্ধ্যায় স্কুলের বারান্দা, ছাদ, পরিত্যক্ত রুম ও স্কুলমাঠে মাদক সেবন ও জুয়া খেলার আসর বসাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করে তারা বলেন, প্রশাসনকে অবহিত করলেও তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা সংশ্লিষ্ট কেউ এ ব্যাপারে জানালে বেশি গুরুত্ব পাবে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হতো বলে তারা মনে করছেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রবি বলেন, প্রতিষ্ঠান বন্ধের সুযোগে মাদক ও জুয়া খেলার ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সমস্যা একটি কারণ হতে পারে বলে মনে করেন তিনি। অনেক বিদ্যালয়ের প্রাচীর নেই। আর সন্ধ্যার সময় তো শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে থাকেন না। লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান শরীফ বলেন, আমার ইউনিয়নের কোনো শিক্ষক বা পরিচালনা পরিষদ এমন সমস্যার কথা আমাকে অবহিত করেননি। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে তা দ্রুত সমাধান করা হবে। তবে এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের উল্লেখ করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আকতার বলেন, অবকাঠামো সমস্যা হোক আর পরিচালনা পরিষদের গাফিলতি হোক মাদকের বিষয়ে কোনো ছাড় নয়। বিদ্যালয়ের আঙিনায় মাদক সেবনের বিষয়টি কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অবহিত করার পাশাপাশি প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে সমস্যা সমাধান করা হবে বলে জানান তিনি। ঈশ্বরদী থানার ওসি আসাদুজ্জামান আসাদ মাদক ও জুয়ার বিষয়ে জিরো টলারেন্সের কথা জানিয়ে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশের সচেতন মানুষ বা সংশ্লিষ্টরা গোপনে আমাদের অবহিত করলে আমরা তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। এতগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।