শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পদ হারাচ্ছেন মেয়র আব্বাস, যেকোনো সময় গ্রেফতার

আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১৯:১৪

রাজশাহীর কাটাখালি পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী শিগগিরই পদ হারাচ্ছেন। পৌরসভার ১২ কাউন্সিলরের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে মেয়র আব্বাস আলীকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের প্রক্রিয়া চলছে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে । 

অন্যদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মমিনের দায়েরকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামরায় যেকোন সময় গ্রেফতার হতে পারেন বিতর্কিত মেয়র আব্বাস আলী। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) এ তথ্য জানিয়েছে।

রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটি রেকর্ড করা হলেও নগরীর রাজপাড়া ও চন্দ্রিমা থানায় দাখিলকৃত একই আইনের পৃথক এজাহার এখনো রেকর্ড হয়নি। এছাড়া রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি ও অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন বিতর্কিত মেয়র আব্বাস আলী।

আরএমপির মুখপাত্র ও অতিরিক্ত সহকারী কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিষয়টি অমাদের পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা দেখছেন। তদন্ত ও প্রমাণ সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। 

নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার তদন্ত চলছে। অডিও ক্লিপটির সত্যতা যাচাইয়ে একজন এক্সপার্টিজের সাহায্য নেয়া হয়েছে। এছাড়া ২৬ নভেম্বর বিকেলে মেয়র আব্বাস নিজেই ফেসবুক লাইভে এসে স্বীকারোক্তি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে তা প্রমাণ করেছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি ও বিতর্কিত বক্তব্য তার। এতে তার দোষ প্রমাণিত হয়েছে।

ওসি আরও বলেন, মেয়র আব্বাসের গ্রেফতারের জন্য ২টি আলামতই যথেষ্ট। একটা হচ্ছে- অডিও ক্লিপ ও দ্বিতীয়টি তার ফেসবুকে এসে মাফ চাওয়া। এই ২টি জিনিসই যথেষ্ট। বর্তমানে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। তার অবস্থান খোঁজার জন্য আমরা সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তা নিচ্ছি। আশা করছি যেকোনো মুহূর্তে মেয়র আব্বাসকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।

মেয়র আব্বাসকে গ্রেফতারের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমতিপত্রের প্রয়োজন আছে কিনা? জানতে চাইলে ওসি নিবারণ বলেন, যদি সন্ত্রাস দমন আইনের মামলা হতো তাহলে স্থানীয় সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে তাকে গ্রেফতার করতে হতো। কিন্তু তার অপরাধটি সিআরপিসি জাতীয় মামলার। এ মামলায় ‘সেনশন অর্ডার বা পূর্বানুমতির’ প্রয়োজন নেই। তারপরও পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি চিঠি জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া হয়েছে। তবে সেটির বাধ্যবাধকতা নেই, শুধুমাত্র জানিয়ে রাখা আরকি।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, পৌরসভার কাউন্সিলরদের প্রদান করা অনাস্থা পত্র ও পৌরসভার রেজুলেশনের কাগজাদি তিনি গ্রহণ করেছেন। এখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আইন অনুযায়ী এ বিষয়ে পর্যালোচনা করে একটি প্রতিবেদন ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি (প্রশাসক) আরও বলেন, মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার কাগজও হাতে এসেছে। সেটির একটি প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী নির্দেশনা আশার পর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার বলেন, মেয়র আব্বাসকে জেলা ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের সুপারিশ শনিবার সকালে ডাকযোগে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আরও একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান আওয়ামী লীগের এই নেতা। 

 

ইত্তেফাক/এমএএম