বছরের শেষ ছবি হিসেবে মুক্তি পাচ্ছে দুই ঘরানার দুটি ছবি। মীর সাব্বির পরিচালিত ‘রাত জাগা ফুল’ ও রনি ভৌমিক পরিচালিত ‘মৃধা বনাম মৃধা’। তবে করোনাকালীন সংকট উত্তরণের পর দীর্ঘদিন ধরে মুক্তির অপেক্ষায় পড়ে থাকা চলচ্চিত্রগুলো মুক্তি পেতে শুরু করেছে। এসব ছবিতে তারকা ইমেজ নয়, বরং গল্প দিয়ে দর্শক টানতে চাইছেন নির্মাতা প্রযোজকেরা।
২৪ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে মৃধা বনাম মৃধা। সিয়াম-নোভা অভিনীত এই ছবিটি মূলত একটি পারিবারিক ক্রাইসিস নিয়ে তৈরি। নোভার প্রথম চলচ্চিত্র এটি, একই সাথে সিয়াম-নোভার দারুণ রসায়নকেই নির্মাতা এখানে কাজে লাগাতে চেয়েছেন। সাথে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন শক্তিমান অভিনেতা তারিক আনাম খান। সিয়াম বলেন, ‘বরাবরই গল্পটাকেই প্রাধান্য দিয়েছি আমি। এরপর দেখি নির্মাণ কে করছেন। কারণ দর্শকের কাছে তো একটি আস্হার জায়গায় তৈরি হয় যার যার। আমার দর্শককে আশাহত করতে চাই না।’ নোভার প্রথম চলচ্চিত্র হিসেবে এই ছবির বিষয়ে বলেন, ‘আমি এই ছবিটির গল্পের প্রতি ভীষণ আশাবাদি। কারণ পরিবার নিয়ে দেখার মতো একটি ছবি। এই ছবির গল্পই এক দর্শক আরেক দর্শককে টানবে।’ ছবি ব্যবসার মোড় এখন স্টার ইজমের বাইরে গল্পের প্রতি আগ্রহী করে তুলেছে। তারই প্রমাণ বছরের শেষদিকে মুক্তি পাওয়া গত কয়েকমাসের ছবিতে নির্মাতারা গল্প বৈচিত্র দিয়েই দর্শক টানার চেষ্টা করছেন।
বছরের শেষ ছবি হিসেবে ৩১ ডিসেম্বর মুক্তি পাচ্ছে মীর সাব্বির পরিচালিত ‘রাত জাগা ফুল’ ছবিটি। সরকারি অনুদানের এই ছবিটি মীর সাব্বিরের প্রথম পরিচালনা। ছবি নির্মাণের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘ছবি নির্মাণ মূলত কুল কিনারাহীন একটি সাগরে জাহাজ চালানোর মতো। তাই অনুদানের অর্থের বাইরেও আমি নিজে থেকে লগ্নি করেছি। কোনো কার্পন্য করিনি গল্পের মানের ব্যাপারে। দেখুন আপনি আমি এখন সারাবিশের বিভিন্ন দেশের ছবি দেখছি। কেউ কেউ পোল্যান্ডের ছবি দেখে মুগ্ধ হয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছে। সে কী ঐ পলিশ সুপারস্টারকে দেখে ছবি দেখতে বসেছিল। তা কীন্তু না। ছবির মেরিট এখন হিরোইজম না। এর গল্প। রাত জাগা ফুল ছবিটিও তেমন। এই ছবিটির গল্প নিয়ে আমি অনেক বছর ধরে অপেক্ষা করেছি। নাটকেও কিন্তু আমি একজন অভিনেতা হিসেবেই দর্শকদের মনে স্হান করেছি। সিনেমাতেও সেটিই চাই। দর্শকরা আমাদের বিমুখ করবে না। এটা নির্মাতা হিসেবে আমার আত্মবিশ্বাস।’
তবে সিনেমা হল প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসায় ছবির আলোচনা এখন বিভাগীয় শহরের কিছু সিনেমা হল আর সিনেপ্লেক্সকে ঘিরেই হচ্ছে। তাই এর ডিজিটাল রাইটস থেকেই মূলত প্রযোজক তার লগ্নি ফেরানোর চেষ্টা করছেন। সেক্ষেত্রে ছবিটির দর্শক প্রতিক্রিয়া। ছবির প্রতি দর্শকদের পজিটিভ রিভিউ, বাড়তি কৌতুহলের ওপরেই ছবির ডিজিটাল স্বত্ত্ব’র চাহিদা বাড়তে থাকে। একারণে এক্ষেত্রে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের রিভিউ ও আলোচনা ছবির ব্যবসাকে প্রভাবিত করছে এখন। তবে বছর শেষে প্রায় ১ ডজন ছবি মুক্তির এই হিসেবটি এটাই প্রমাণ করে যে, আগামী ২০২২ এর চলচ্চিত্র শিল্প তারকা নির্ভর নয়। গল্প নির্ভর হবে। সেক্ষেত্রে মেধাবী অভিনেতাদের দারুণ এক সুযোগ রয়েছে বলে সকলে মনে করেন।