শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কুমিল্লায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণ 

অনেকের শরীরে হাজারের বেশি স্প্লিন্টার

আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৪১

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বেলুন ফোলানোর গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লামইয়া সাইফুল বৃহস্পতিবার রাতে এ তদন্ত কমিটি করেন।

এদিকে এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। কারো কারো শরীরে ১ হাজারেরও বেশি স্প্লিন্টার ঢুকেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে মাত্র ছয়টি পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, নাঙ্গলকোট উপজেলার মৌকরা ইউনিয়নের বিরুলিয়া গ্রামে প্রতি পৌষ মাসেই মেলা বসে। আজ শনিবার এ মেলা হওয়ার কথা ছিল। মেলায় বিক্রির জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্যাসের মাধ্যমে অতিরিক্ত বেলুন ফোলাচ্ছিলেন বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন। তার এই কাজ দেখতে ভিড় করে শিশুসহ স্থানীয় এলাকার উত্সুক লোকজন। এ সময় হঠাৎ বিস্ফোরিত হয় গ্যাস সিলিন্ডার। আহত হয় অর্ধশতাধিক।

নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দেবদাস দেব জানান, আহতদের মধ্যে ৮-৯ জন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি হয়েছে স্প্লিন্টার ইনজুরি। অনেকের হাত-পা ভেঙে গেছে। অন্তত আট জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান মির্জা মু. তাইয়্যেবুল ইসলাম জানান, বিস্ফোরণে গ্যাস সিলিন্ডারের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লোহার কণা আহতদের শরীরে ঢুকে গেছে। অনেকের শরীরে ১ হাজারেরও বেশি স্প্লিন্টার ঢুকেছে। তবে বড় ধরনের বার্ন না হলেও এখনো ভর্তি ১৭ জনের মধ্যে আট জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদের অধিকাংশই শিশু। একজন শিশুর অপারেশন করা হয়েছে। বেলুন বিক্রেতা আনোয়ার হোসেনসহ পাঁচ জনকে উন্নত চিকিত্সার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. মহিউদ্দিন জানান, এ হাসপাতালে গুরুতর আহত ১৭ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে তিন জনকে উন্নত চিকিত্সার জন্য ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে পাঠানো হয়েছে, আরো দুই জনকে তাদের স্বজনরা নিজ দায়িত্বে চিকিৎসার জন্য ঐ ইন্সটিটিউটে নিয়ে গেছেন।

কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শাহাদৎ হোসেন জানান, চিকিৎসার জন্য গুরুতর আহত ছয় জনের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। বাকি আহতদেরও সহায়তা দেওয়া হবে। 

নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লামইয়া সাইফুল বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণেই এ ঘটনা ঘটেছে। তবে তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। 

ইত্তেফাক/ ইআ