প্রকৃতির এক অনন্য সম্পদ টাঙ্গুয়ার হাওরটি শুধু দেশেরই সম্পদ নয়। এটি বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃত। ছোট-বড় ১০৪টি বিলের সমন্বয়ে ৩৪ হাজার ৫৮০ একরের বেশি আয়তনের নয়ানাভিরাম টাঙ্গুয়ার হাওরটি সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর ও ধর্মপাশায় অবস্হিত। হাওরে পানির নিচে থাকা উদ্ভিদ, প্রায় ২০০ প্রজাতির মাছের বাসস্হান এবং খাদ্যের যোগান দেয়।
এই হাওরের পানির নিচের জলজ উদ্ভিদ প্রাকৃতিকভাবে পানি ফিল্টার করে থাকে। দিগন্তবিস্তৃত নীল জলাশয়ে সারি সারি হিজল-করচ গাছ। শীতকালে সুদূর সাইবেরিয়াসহ নানা দেশ থেকে আসা বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখির এখানে উড়ে বেড়ানোর দৃশ্য মনোরম। বিশাল টাঙ্গুয়ার হাওর জীববৈচিত্রে্যরও আধার। এটি দেশের ‘মাদার ফিশারি’ বলে খ্যাত। কিন্তু কয়েক বছর ধরে মাছ, পাখি ও বিরল বৃক্ষরাজি দসু্যদের কবলে পড়ে টাঙ্গুয়ার হাওর এখন বিপন্ন।
‘বছরের পর বছর টাঙ্গুয়ায় মহালুটপাট চলছে’— এই মন্তব্য করে তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধূরী বাবুল বলেন, ‘টাঙ্গুয়ার হাওর ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এটাকে বাঁচান।’
তিনি বলেন, ‘মাছ শেষ। পাখি আগের মতো আসে না। গাছও উজাড় হয়ে যাচ্ছে।’
এলাকাবাসী জানান, কারেন্ট জাল, ভেটজাল, লাঠিজালসহ বিভিন্ন জাল দিয়ে প্রতিদিন কয়েক শ নৌকা মাছ লুটে নিচ্ছে। মাটি ঘেঁষে জাল টানার কারণে হাওরের নিচে থাকা জলজ প্রাণ এবং বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অব্যবস্হাপনা ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই এই সম্পদ বিনষ্টের পথে বলে জানান এলাকার সচেতন মানুষরা।