শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

জনকল্যাণে মরণোত্তর অঙ্গদান

আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ০৯:৪৫

একজন মানুষ তার মৃতু্যর পর দেহের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অঙ্গ যেমন— কিডনি, হার্ট, লিভার, ফুসফুস, চোখ—এমনকি পুরা শরীরটা দান করতে পারেন। মারা যাওয়ার পর ঐ মৃত ব্যক্তির দান করা বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিস্থাপন করে বেঁচে থাকতে পারে অঙ্গ অকার্যকর হওয়া অন্যান্য রোগী। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘মরণোত্তর অঙ্গদান বা ক্যাডাভারিক অরগান ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন’।

মরণোত্তর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান করা ব্যক্তির দুটি কিডনি দুই জনের, একটা লিভার এক জনের, একটা ফুসফুস এক জনের এবং একটা হার্ট এক জনের দেহে প্রতিস্থাপন করে ভিন্ন ভিন্ন জন রোগীকে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব। চোখের কর্নিয়া দান করার মাধ্যমে অন্ধ লোক দৃষ্টি ফিরে পেতে পারেন। এছাড়া পুরা শরীরটা মেডিক্যাল কলেজে দান করলে ছাত্ররা হাতে-কলমে শিক্ষা এবং গবেষণা চালাতে পারবে।

অঙ্গদান প্রক্রিয়ায় একজন মানুষ অঙ্গদান করবেন এবং তার মৃতু্যর পর সেই অঙ্গটি সংগ্রহ করে তা প্রতিস্থাপিত করা হবে এমন রোগীর দেহে, যার অকার্যকর হওয়া অঙ্গের জন্য প্রয়োজন। উন্নত দেশসমূহে মরণোত্তর প্রক্রিয়ায় অঙ্গ নিয়ে বেঁচে আছেন অঙ্গ বিকল হওয়া বিপুল মানুষ। অথচ প্রচলিত আইনে কোনো বাধা না থাকলেও চোখের কর্নিয়া সংযোজন ছাড়া বাংলাদেশে এখনো শুরুই হয়নি অন্য কোনো অঙ্গ মরণোত্তর প্রক্রিয়ায় প্রতিস্থাপন।

একটা গল্প দিয়ে শুরু করি। অনেক দিন আগের কথা, একজন জ্ঞানী ব্যক্তি মারা যাওয়ার আগে উইল করে গেছেন, ‘আমার মৃতু্যর পর চোখ, অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং পুরা শরীরটা দান করে গেলাম। কোনো রোগীর অকার্যকর অঙ্গের প্রয়োজন হলে আমার সেই অঙ্গ নিয়ে তার শরীরে প্রতিস্হাপন করতে পারবে। এমনকি আমার শরীরটা মেডিক্যাল কলেজে ডিসেকশন হলে যেন দিয়ে দেওয়া হয়। মেডিক্যালের ছাত্ররা আমার শরীর চিকিত্সাবিদ্যায় জ্ঞানার্জনের এবং গবেষণাকাজে ব্যবহার করতে পারবে।’ ঐ সময় জানা গেল, কোনো এক রোগীর দুটো চোখ অন্ধ, তার চোখের কর্নিয়া ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা দরকার। কিন্তু কোনো ডোনার পাওয়া যাচ্ছিল না। উইল করা ভদ্রলোক মারা যাবার সঙ্গে সঙ্গে খবর পেয়ে বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ ঐ ভদ্রলোকের চোখ দুটো উঠিয়ে নিলেন। সিদ্ধান্ত হলো তার চোখের কর্নিয়া অন্ধ লোকটির চোখে ট্রান্সপ্লান্ট করা হবে। মরণোত্তর চক্ষু দানকারী ঐ ভদ্রলোকের পরিচয় রোগী এবং তার পরিবারকে জানানো হলো। বাদ সাধল রোগী নিজেই, যখন তিনি জানতে পারলেন চক্ষু দানকারী মৃত ভদ্রলোক ছিলেন নাস্তিক। রোগী নিজে একজন মৌলানা, ধর্মভীরু। নাস্তিকের দান করা চক্ষু নিতে তিনি অস্বীকৃতি জানালেন। পরে তাকে অনেক বোঝানো হলো যে, শরীরের একটা অঙ্গ ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা কোনোক্রমেই ধর্মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। সুতরাং দানকারীর চোখের কর্নিয়া আপনার চোখে ট্রান্সপ্ল্যান্ট করলে দৃষ্টি ফিরে পাবেন। আপনি ভালো থাকবেন, আপনার পরিবার ভালো থাকবে, এমনকি ভবিষ্যতে দেশের এবং দশের অনেক উপকারও করতে পারবেন। শেষ পর্যন্ত উনি রাজি হলেন, কর্নিয়া ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হলো তার চোখে এবং উনি দৃষ্টি ফিরে পেলেন।

আরো একটা গল্পের অবতারণা করছি। একজন বয়স্কা ভদ্রমহিলা, তার দুটো কিডনিই সম্পূর্ণ অকার্যকর। ছেলেমেয়েরা অনেক চেষ্টা করেও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার মতো দেশে-বিদেশে কোনো ডোনার খুঁজে পাচ্ছিলেন না। উনি বিদেশে থাকেন, হঠাত্ একদিন হাসপাতাল থেকে টেলিফোন করা হলো তার ছেলের কাছে, ‘আপনার মায়ের কিডনি নষ্ট, যদি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে চান এখনই হাসপাতলে নিয়ে আসুন, একজন ডোনার পাওয়া গেছে।’ সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলো, দ্রুত প্রয়োজনীয় পরীক্ষানিরীক্ষা করে তার একটি কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হলো। রোগী সম্পূর্ণ সুস্হ হয়ে নতুন জীবন পেয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন। তার বয়স বর্তমানে ৯০। প্রায় ১০ বছর হতে চলল, উনি ভালো আছেন, সুস্হ আছেন। যিনি কিডনি দান করে গেছেন উনি ছিলেন একজন অ্যাক্সিডেন্টের রোগী, আইসিইউতে মারা গেছেন। তার ভ্যানিটি ব্যাগে ছিল একটি ডোনার কার্ড, যাতে লেখা আছে ‘আমার মৃতু্যর পর শরীরের সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান করে গেলাম, জীবিত রোগী যার-যে অকার্যকর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রয়োজন, তাকে যেন তা দিয়ে দেওয়া হয়।’

আরো একজন ভদ্রমহিলার গল্প বলছি। মৃতু্যর আগে উইল করে গেছেন, ‘আমার মৃতু্যর পরে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান করে গেলাম, যা জীবিত বিকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গের রোগীকে প্রতিস্হাপন করতে পারবেন।’ ভদ্রমহিলার কোনো একটি অপারেশনের সময়েই ব্রেন ডেথ হয়। পরিবারের সম্মতিতে তার লিভার ও দুটি কিডনি প্রতিস্হাপিত করা হয় তিন জন রোগীর শরীরে এবং তারা সবাই সুস্হ হয়ে ওঠেন।

অন্য চিন্তাধারার লোকও সমাজে বিদ্যমান। চক্ষুদান প্রসঙ্গে একবার একজনকে বলতে শোনা গেছে, ‘এ জন্মে মরার পর চক্ষুদান করলে পরের জন্মে আমি অন্ধ হয়ে জন্মাব। দরকার নেই আমার মরণোত্তর চক্ষুদানের!’

আরো একটি অদ্ভুত গল্পের কথা বলছি। এক ভদ্রলোক মারা যাওয়ার আগে উইল করে গেছেন ‘আমি মারা যাবার পরে আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান করে গেলাম, তবে কোনো চোর ডাকাত বা অসত্ লোকের শরীরে ঐ অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো যেন প্রতিস্হাপন করা না হয়। কারণ আমার অঙ্গ প্রতিস্হাপন করে অপকর্ম চালিয়ে যাবার সুযোগ আমি কাউকে করে দিতে চাই না।’

মৃত মানুষের শরীর থেকে প্রায় সব অঙ্গই প্রতিস্হাপনের জন্য সংগ্রহ করা যায়। লাখ লাখ মানুষ শরীরের কোনো কোনো অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়ার রোগে ভোগেন এবং তার একমাত্র চিকিত্সা অঙ্গ প্রতিস্হাপন। তাই যত বেশিসংখ্যক মানুষ মরণোত্তর অঙ্গদান করবেন, তত বেশিসংখ্যক রোগীর জীবন রক্ষা পাবে 

মানবদেহের অত্যাবশ্যক অঙ্গ যেমন -কিডনি, লিভার, হূত্পিণ্ড, ফুসফুস ইত্যাদির যে কোনো একটি কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেললে জীবনাবসান অবধারিত। তখন বিকল্প উপায় হিসেবে অঙ্গ প্রতিস্হাপনের কথা ভাবা হয়। বাংলাদেশে শুধু রক্ত-সম্পর্কীয় জীবিত নিকটাত্মীয়ের কাছ থেকে কিডনি ও লিভার সংযোজন হচ্ছে। জীবিত মানুষ নিজের দুটি কিডনি থেকে একটি এবং লিভারের কিছুটা অংশ দান করতে পারেন। মৃত মানুষের শরীর থেকে প্রায় সব অঙ্গই প্রতিস্হাপনের জন্য সংগ্রহ করা যায়। লাখ লাখ মানুষ শরীরের কোনো কোনো অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়ার রোগে ভোগেন এবং তার একমাত্র চিকিত্সা অঙ্গ প্রতিস্হাপন। তাই যত বেশিসংখ্যক মানুষ মরণোত্তর অঙ্গদান করবেন, তত বেশিসংখ্যক রোগীর জীবন রক্ষা পাবে।

মরণোত্তর অঙ্গদানের অগ্রগতি আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে খুব একটা দৃশ্যমান নয়। মৃতু্যর পরে অঙ্গ দান করা অনেকের কাছে শোভনীয় মনে হয় না। কারণ ব্যাপারটি অত্যন্ত জটিল। এখানে ধর্মীয়, পারিবারিক, সামাজিক অনেক কিছু জড়িত। এ কথা সত্য, মানুষ মারা গেলে তার দেহটা তো আর কোনো কাজে আসবে না। তাকে কবর দেওয়া হয়, ফলে তার শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সবকিছু কয়েক দিন পরেই নষ্ট হয়ে যাবে, পচে যাবে, মাটির সঙ্গে মিশে যাবে। অথবা শরীর পুড়িয়ে দিলে সঙ্গে সঙ্গে তো ছাই হয়ে যাবে। যদি মৃতু্যর পরে তার দেহের কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অকার্যকর হওয়া রোগাক্রান্ত মানুষের জন্য ব্যবহার করা যায়, তা আসলে একটু বিশাল অবদান বলেই মনে হয়। তার দান করা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে অন্য একটা মানুষ ভালো থাকবে, সুস্হ থাকবে, তার পরিবার ভালো থাকবে। এমনকি তার মাধ্যমে সমাজের অনেক কাজে বা সমাজের অনেকেই উপকৃত হতে পারেন। মৃতু্যর পর মৃত ব্যক্তির আত্মা তো আল্লাহর কাছেই চলে যায়, শরীরের আর কীই-বা মূল্য থাকে। কিন্তু এর দ্বারা যদি অপর একজন সুস্হভাবে বেঁচে থাকতে সক্ষম হন, তবে তার চেয়ে পুণ্যের কাজ আর কী হতে পারে? এ ধরনের চিন্তাভাবনা আমাদের মধ্যে অনেকেরই কিন্তু নাই। বহু মানুষ অঙ্গদান করতে ভয় পান। এতে ডোনার বা দাতার সংকট দেখা দিচ্ছে প্রকট আকারে। তাই শুধু অঙ্গ প্রতিস্হাপনের অভাবে মৃতু্য হয় হাজার হাজার মানুষের।

মনে রাখতে হবে, হূদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গেও রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং সেগুলো দ্রুত বিকল হয়ে পড়ে। আর ব্রেন ডেথ হলে যার বেঁচে থাকার কোনো সম্ভাবনাই নাই, তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো নিয়ে অন্য রোগীর ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা সম্ভব। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে হাসপাতালের সাপোর্টে হূদ্যন্ত্রের কাজ চালু রাখতে হবে। দেশে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় প্রচুর মানুষ মারা যাচ্ছে। আইসিইতে মুমূর্ষু অবস্হায় থাকা কোনো রোগী যার বাঁচার কোনো সম্ভাবনা নেই, তাকে ব্রেইন ডেথ ঘোষণা করার পর তার দেহ থেকে অঙ্গ বিযুক্ত করে তা প্রতিস্হাপন করে আলাদাভাবে পাঁচ জন অঙ্গবিকল মানুষকে বাঁচানো যায়। তবে এটা এমন নয় যে, কারো বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল অথচ তার দেহ থেকে অঙ্গ নিয়ে মেরে ফেলা হলো। মানবদেহে মরণোত্তর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে এ কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে, মেডিসিন অথবা ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন, নিউরোলজি এবং অ্যানেসথেসিওলজি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অথবা সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার অনূ্যন তিন জন চিকিত্সক সমন্বয়ে গঠিত কমিটি কোনো ব্যক্তির ব্রেইন ডেথ ঘোষণা করতে পারবেন। এর পরই ঐ ব্যক্তির দেহ থেকে অঙ্গ বিযুক্ত করার কাজটি করা যাবে।

উন্নত বিশ্বে কিডনিবিকল অনেক মানুষ মরণোত্তর অঙ্গদান প্রক্রিয়ায় চিকিত্সা নিয়ে নতুন জীবন ফিরে পাচ্ছেন। আর বাংলাদেশে শুধু কিডনি সংযোজনে দাতা সংকটের কারণে বছরে মারা যাচ্ছে ৪০ হাজার কিডনি রোগী। একইভাবে হাজার হাজার মানুষ লিভার, হার্ট, ফুসফুস, অগ্ন্যাশয় ইত্যাদি রোগে মারা যাচ্ছেন। এসব রোগীকে বাঁচিয়ে রাখতে মরণোত্তর অঙ্গ সংযোজন কার্যক্রম চালু করা খুব জরুরি। বাংলাদেশে ২০১৮ সালের মানবদেহ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে মৃত ব্যক্তির অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অন্যের শরীরে সংযোজনের সুযোগ রাখা হয়েছে। আইনে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বলতে কিডনি, হার্ট, ফুসফুস, অন্ত্র, লিভার, অগ্ন্যাশয়, অস্হি, অস্হিমজ্জা, চোখ, চর্ম, টিসু্যসহ মানবদেহে সংযোজনযোগ্য যে কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে বোঝানো হয়েছে। বাস্তবে ক্যাডাভারিক অরগান ট্রান্সপ্ল্যান্ট প্রক্রিয়া অধরাই থেকে যাচ্ছে। অথচ ধর্ম কিংবা বিদ্যমান আইনে মরণোত্তর অঙ্গ দানে কোনো বাধা নেই। মুসলিম বিশ্বের অন্যতম সংস্হা ওআইসি এবং বিশিষ্ট ইসলামিক ওলামাগণ মরণোত্তর কিডনিসহ অন্যান্য অঙ্গ দানকে স্বীকৃতি প্রদান করেছেন।

অঙ্গদান নিয়ে মানুষের মধ্যে একটা আবেগ কাজ করে। আমরা প্রযুক্তিতে বেশ এগিয়ে যাচ্ছি, এখন মানবিকভাবে আরো এগিয়ে যেতে হবে। ক্ষণস্হায়ী জীবনে আমাদের সবার উচিত ভালো কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা, যা-কিছু কল্যাণকর তা-ই ধর্মের অন্যতম শিক্ষা। ধর্ম একে অপরের প্রতি দয়া-মায়া ও ভালোবাসতে শেখায়। এক জন মানুষ যে ধর্মের অনুসারীই হন, কোনোভাবেই যেন তিনি একে অপরের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত না হন, বরং কল্যাণ লাভ করেন, এটাই ধর্মের শিক্ষা। মানুষ একে অপরের বিপদে-আপদে এগিয়ে আসবেন, এটাই স্বাভাবিক। আমি মারা যাবার পর আমার অঙ্গ দিয়ে যদি একটা মুমূষু‌র্ মানুষের জীবন বেঁচে থাকে, তবে তা আমার জন্য এক বিরাট অর্জন। মরণোত্তর অঙ্গদানে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে বেশ কিছু ব্যক্তি ও সংগঠন কাজ করছে। এ কার্যক্রমকে সফল করতে সবার আগে প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা। মরণোত্তর অঙ্গদান কঠিন কাজ মনে হলেও, অসম্ভব কিন্তু নয়। বিপুলসংখ্যক মানুষের মধ্যে এই বোধ ও চেতনা জাগ্রত হওয়া আশু প্রয়োজন। আসুন, আমরা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অকার্যকর হওয়া রোগীদের পাশে থাকি। এ দেশে এই চিকিত্সা চালু হলে অকালে হারাতে হবে না অনেক জীবন। তাই মরণোত্তর অঙ্গ বা দেহদান এমনই একটি কল্যাণকর কাজ। মোমবাতি যেমন জ্বলতে জ্বলতে সবাইকে আলো দিয়ে নিজে নিভে যায়, আমাদের জীবনপ্রদীপ নিভে গেলেও অন্যকে আলো দিয়ে যাওয়া উচিত।

লেখক :প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক

ইত্তেফাক/এসজেড

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন