উত্তর কোরিয়া একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। নানা সংকটে জর্জরিত দেশটি কীভাবে এ কাজের পিছনে বিপুল অঙ্কের অর্থের জোগান দিচ্ছে সেই প্রশ্ন জনমনে বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের এক গোপন প্রতিবেদনে এর উত্তর মেলেছে। এতে বলা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির তহবিল জোগাতে উত্তর কোরিয়া ক্রিপ্টোকারেন্সি (ডিজিটাল মুদ্রা) এক্সচেঞ্জে সাইবার হামলা চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ চুরি করেছে। আর তা দিয়েই এই কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ‘উত্তর কোরিয়া নিষেধাজ্ঞা কমিটি’র কাছে শুক্রবার সন্ধ্যায় বার্ষিক এই প্রতিবেদন জমা দেন স্বাধীন নিষেধাজ্ঞা পর্যবেক্ষকরা। তারা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার সাইবার হামলা, বিশেষ করে ক্রিপ্টোকারেন্সির ওপর হামলা, দেশটির অস্ত্র কর্মসূচিতে ব্যয়ের জন্য রাজস্ব আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উত্স হয়ে আছে।
তাছাড়া, উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা আরো বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ক্রিপ্টোকারেন্সি ফার্ম এবং এক্সচেঞ্জকে সাইবার হামলার নিশানা করে চলেছে এমন তথ্যও পেয়েছেন বলে জানিয়েছে পর্যবেক্ষকরা।
জাতিসংঘ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘একটি সদস্য রাষ্ট্র জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার (ডিপিআরকে) সাইবার হামলাকারীরা ২০২০ সাল এবং ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ার অন্তত তিনটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ থেকে ৫ কোটির বেশি ডলার চুরি করেছে। প্রতিবেদনে সিকিউরিটি ফার্ম চ্যানালিসিসস এর গত মাসে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে; যাতে বলা হয়, উত্তর কোরিয়া গত বছর ক্রিপ্টোকারেন্সি প্ল্যাটফরমে অন্তত সাতটি সাইবার হামলা চালিয়ে প্রায় ৪০ কোটি ডলারের ডিজিটাল মুদ্রা হাতিয়ে নিয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালের জাতিসংঘ প্রতিবেদনে নিষেধাজ্ঞা পর্যবেক্ষকরা বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়া তাদের গণবিধ্বংসী অস্ত্র কর্মসূচির জন্য খুবই দক্ষতার সঙ্গে বড় ধরনের সাইবার হামলা চালিয়ে আনুমানিক ২০০ কোটি ডলার তহবিল সংগ্রহ করেছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। কিন্তু এরপরও উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন করে যাচ্ছে।
জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পিয়ংইয়ংয়ের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র গত শুক্রবার বলেছে, উত্তর কোরিয়া কেবল গত মাসেই ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে।