শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আইজিপির-সাংসদের আত্মীয় পরিচয়ে চালাতেন তিনি 

আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪:২৯

রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকার বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে ‘গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ’ পণ্য অর্ডার দিয়ে তা হাতে পাওয়ার পর টাকা পরিশোধ না করেই অনত্র বিক্রি করে দিত এ এ এম সালাউদ্দিন ভূইয়া (৫৫)। দীর্ঘদিন ধরে চলা এ প্রতারণার অংশ হিসেবে কখনো সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল, কখনো কোম্পানির সিইও, আবার কখনো মার্কেটিং ম্যানেজার বা আইজিপির আত্মীয় বা সাংসদ সদস্যের নিকট আত্মীয় পরিচয় দিতেন সালাউদ্দিন। এর মাধ্যমে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি টাকার বেশি অর্থ।

মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএস এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। এসময় তার কাছ থেকে সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরা বাঁধাই করা একটি ফটো ফ্রেম, সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত একটি গেঞ্জি, ক্যাপ, মানিব্যাগ ও মেডেল, চারটি জাল লেটার প্যাড, একটি জাল সিল, দুইটি জাল ক্রয়াদেশ, দুইটি জাল সোয়াচ প্যাড, দুইটি চেক বই, তিনটি মোবাইল ফোন ও বিভিন্ন কন্টেন্ট এবং নগদ প্রায় ১০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-এর র‍্যাপিড আ্যকশন ব্যাটালিয়ন মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি জানান, এক সময় মাছ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন সালাউদ্দিন। পরবর্তীতে প্রতারণায় জড়িয়ে পড়েন। বিশেষ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির ভবনে অফিস কক্ষ ভাড়া নিয়ে নিজেকে ওই প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির মালিক পরিচয় দিতেন।

র‌্যাব মুখপাত্র কমান্ডার মঈন বলেন, বিভিন্ন গার্মেন্টস কোম্পানির কাছ থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্য ক্রয়ের আবেদন করতেন সালাউদ্দিন। পরে ভুয়া ক্রয়াদেশ পেয়ে গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ কোম্পানিগুলোর ক্রয়াদেশ অনুযায়ী সম্পূর্ণ পণ্য ডেলিভারি করত। সালাউদ্দিন পণ্য ডেলিভারি পাওয়ার পর তাদের টাকা পরিশোধ না করে পণ্যগুলো বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিতেন। ভুক্তভোগীরা তার কাছে পাওনা টাকা ফেরত চাইলে টাকা না দিয়ে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন। এছাড়া নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আবার কখনও আইজিপির আত্মীয় বা সাংসদ সদস্যের নিকট আত্মীয় পরিচয় দিতেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিতেন। গত ৫ ফেব্রুয়ারি একজন ভুক্তভোগীসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান র‌্যাবের কাছে অভিযোগ দেয়। পরবর্তীতে র‌্যাব ছায়াতদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সালাউদ্দিন জানান, প্রায় পাঁচ বছর ধরে তিনি এই ধরণের প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে তিনি কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছেন। বর্তমানে মহাখালীতে একটি অফিস সাবলেট নিয়ে বিগত তিনমাস এই অপরাধ করে আসছেন। কোন ঠিকানায় তিনি ছয়মাসের বেশি অবস্থান করেন না। তাছাড়া ফটোশপের মাধ্যমে বিভিন্ন ছবি এডিট করে প্রতারণার কাজে ব্যবহার করেছেন। তার নামে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাৎ-এর অভিযোগে তিনটি মামলা রয়েছে।

 

ইত্তেফাক/কেএইচ/জেডএইচডি