শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সিলেটে জ্বালানি তেলের চাহিদা দিনে ১০ লাখ লিটার, মেলে সোয়া ৩ লাখ!

আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:১৫

সিলেটে জ্বালানি তেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলারস ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্ট অ্যান্ড পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমদ চৌধুরী ইত্তেফাককে বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ ধরে সিলেটে জ্বালানি তেলের তীব্র সংকট চলছে। সিলেটে দৈনিক প্রায় ১০ লাখ লিটার জ্বালানি তেলের চাহিদা। কিন্তু গড়ে মাত্র ৩ থেকে সোয়া ৩ লাখ লিটার তেল আসে সিলেটে।’ জ্বালানি তেলের সংকটের কারণে সিলেটের প্রধান ফসল বোরো চাষে সেচ সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সিলেটের ফিল্ডগুলোতে বর্তমানে তেল উত্তোলন বন্ধ। চট্টগ্রাম থেকে তেল নিয়ে আসার ক্ষেত্রেও ওয়াগনের স্বল্পতা রয়েছে। এসব কারণে সংকট আরো তীব্র হয়ে উঠেছে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে জ্বালানি তেলের সংকট কাটিয়ে উঠতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ পরিস্থিতিতে সংকট সমাধানের জন্য গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্তৃপক্ষকে এক সপ্তাহের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন সিলেটের জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে সমস্যা সমাধানের বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবেন বলে জানিয়েছেন তারা। বৃহস্পতিবার সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নবাগত জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমান এক মতবিনিময় সভায় দ্রুত তাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। সভায় সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, সিলেটের সিএনজি ফিলিং স্টেশন মালিকগণ গ্যাসের অনুমোদিত লোড বৃদ্ধির জন্য জালালাবাদ গ্যাস, পেট্রোবাংলাসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে দীর্ঘদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে অতিরিক্ত গ্যাস বিক্রির কারণে বিভিন্ন সিএনজি স্টেশনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে দেশের সিএনজি স্টেশন মালিকগণ খুবই উদ্বিগ্ন ও হতাশ। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণে তিনি জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা কামনা করেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এক বছর আগেও সিলেটের গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে উত্তোলিত কনডেনসেট থেকে জ্বালানি তেল উৎপাদন করে সিলেটের পাম্পগুলোতে সরবরাহ করা হতো। তখন সিলেটে জ্বালানি তেলের সংকট এমন ছিল না। কিন্তু সিলেটের তেলের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বছরখানেক আগে থেকে সিলেটের গ্যাসফিল্ড থেকে পাম্পে জ্বালানি সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে সিলেটের পাম্প মালিকদের ওয়াগনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে জ্বালানি আনতে বাধ্য করা হয়। সিলেটের তেল ব্যবসায়ীরা বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখছেন না। তারা বলেন, সিলেটে এমন সংকট তৈরি হলো কেন তা অনুসন্ধান করা প্রয়োজন।

গ্যাস বিক্রয়ের লোড বৃদ্ধির দাবি

ব্যবসায়ী নেতা জুবায়ের আহমদ চৌধুরী বলেন, দৈনিক ১২ ঘণ্টা হিসেবে, মাসিক ২৬ দিনের লোড গণনার প্রক্রিয়া অযৌক্তিক, কারণ প্রতিদিন গ্যাস বিক্রয় একরকম থাকে না। এছাড়াও দেশের ক্রমবর্ধমান যানবাহন বৃদ্ধির আলোকে জ্বালানির চাহিদা বিবেচনায় এ হিসাবটি বাস্তবতাবিবর্জিত। দেশের অন্যান্য গ্যাস বিপণন প্রতিষ্ঠানের ন্যায় জালালাবাদ গ্যাসের আওতাধীন সিএনজি স্টেশনসমূহের গ্যাস বিক্রয়ের লোড বৃদ্ধি করা একান্ত আবশ্যক। তিনি জানান, জেলা প্রশাসক গ্যাসের লোড বৃদ্ধি এবং সিএনজি স্টেশনসমূহের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করে বিষয়টি জরুরিভিত্তিতে সুরাহার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেছেন। জুবায়ের বলেন- ‘আমরা আশাবাদী হয়ে অপেক্ষায় থাকলাম’।

ইত্তেফাক/ ইআ