বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

তথ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, জাতিসংঘে ভোট দেওয়া থেকে ভারতের বিরত কারণ কি মির্জা ফখরুল বলবেন?

আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২২, ২০:২৮

জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া থেকে ভারত কেন বিরত ছিল তা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বলবেন কি- এমন প্রশ্ন রেখেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশ ভোটদানে বিরত ছিল, বাংলাদেশ অনেক সময় ভোটদানে বিরত থাকে। এবার যখন জাতিসংঘে প্রস্তাব আনা হয়, তখন ভারতসহ আরও অনেকগুলো দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের কাছে আমার প্রশ্ন ভারত কেন বিরত ছিল ? সেটির একটা ব্যাখ্যাও যেন তিনি দেন। আসলে সব বিষয়ে মতামত দিতে গিয়ে কোনটাতে কি বলবেন- তিনি খেই হারিয়ে ফেলেন।

জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকা সংবিধানের মূল্যবোধের পরিপন্থী, রাশিয়ার সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য কৌশল অবলম্বন করেছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শনিবার (৫ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁও ফিল্ম আর্কাইভে ১৫তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজী পুকুর পাড়ের বাসা থেকে তথ্যমন্ত্রী ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের পররাষ্ট্র নীতি হচ্ছে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, আমরা অবশ্যই যেকোনো সংঘাত-যুদ্ধের বিরোধী। পৃথিবীতে শান্তি স্থাপিত হোক, শান্তি বিরাজ করুক সেটিই আমরা চাই। জাতিসংঘে কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ ভোটদানে বিরত ছিল, ভারতও বিরত ছিল। এখন ভারত কি কারণে বিরত ছিল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব যদি সেই ব্যাখ্যাটা দেন খুব ভালো হয়।

তিনি বলেন, আসলে কোনো ইস্যু নাই, তাই মির্জা ফখরুল জাতিসংঘ ও ভোটদান নিয়ে কথা বলেন, আবার খালেদা জিয়াকে যদি বিদেশ পাঠানো না হয় জীবন সঙ্কটাপন্ন, এগুলো বলে মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, তারা যখন আন্দোলন করছেন তখন খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন, তখন তারা প্রচণ্ড হতাশ হলেন। এখন খড়কুটো ধরে তারা রাজনৈতিকভাবে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন মাত্র।

বাংলাদেশ এখন দ্রব্যমূল্যের দিক থেকে দুর্বিষহ অবস্থানে আছে মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীতে সবসময় দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, যখন চল্লিশের দশকে বাংলায় দুর্ভিক্ষ হয় তখন দ্রব্যমূল্য অনেক কম ছিল, তখন এক টাকায় অনেক কেজি চাল পাওয়া যেত। এখন তো এক টাকায় এক কেজি চালও পাওয়া যায় না। তখন এক আনায় কয়েক কেজি চাল পাওয়া যেত। তখন কিন্তু দুর্ভিক্ষ হয়েছে, কারণ তখন মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ছিল না।

তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, উত্তর আমেরিকা, কন্টিনেন্টাল ইউরোপ, ইউকে, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত পাকিস্তানসহ পৃথিবীর সবদেশে গত কয়েক বছরে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে, আন্তর্জাতিকভাবেও বেড়েছে। কিন্তু মাথাপিছু আয় সব জায়গায় বাড়েনি। আমাদের দেশেও ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়েনি তা নয়, কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে অনেক বেশি বেড়েছে মানুষের মাথাপিছু আয়।

‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজ থেকে নাবিকদের উদ্ধারের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বিধিবিধান অনুযায়ী যখন কোনো জাহাজ পরিত্যক্ত হয় তখন কিন্তু সেই জাহাজের মালিকানা কোথায় যাবে সেটি বলা যায় না। সরকার জাহাজের মালিকানার চেয়েও নাবিকদের জীবন রক্ষাকেই গুরুত্ব দিয়েছে। সেজন্য জাহাজ পরিত্যক্ত ঘোষণা করে জাহাজের নাবিকদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে। একইসঙ্গে সেখানে যেসব বাংলাদেশি আছে তাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকার বিভিন্ন দূতাবাসের মাধ্যমে কাজ করছে এবং অনেককেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ইত্তেফাক/ইউবি