শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের চেয়ে জরুরি সুরক্ষিত বাড়ি

আপডেট : ০৮ মে ২০১৯, ২১:৫৭

ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের চেয়ে সুরক্ষিত বাড়ি নির্মাণ বেশি জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ফোরামের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেছেন, সরকার সম্প্রতি নতুন সাত হাজার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু সংরক্ষণ ও পরিচর্যার অভাবে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ন্যূনতম মানবিক সুবিধা পাওয়া যায় না বিধায় মানুষ সেখানে যেতে চায় না। একটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যয় দিয়ে উপকূলে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সক্ষম অন্তত ৩৫টি দোতলা বাড়ি নির্মাণ করা সম্ভব। এসব বাড়ি হস্তান্তর করে দিলে বাড়ির অধিবাসীরা নিজেরাই যেমন এর যত্ন করতে পারবে তেমনি দুর্যোগে প্রতিবেশীকে আশ্রয়ও দিতে পারবে।

গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ফণীর অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যতে করণীয়’ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। উপকূলীয় নাগরিক সমাজ সংগঠন কোস্ট এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

দুর্যোগ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নঈম গওহর ওয়ারা বলেন, সরকার ঘূর্ণিঝড়ের আগে মানুষের প্রস্তুতির কথা বলেন, কিন্তু অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঘূর্ণিঝড় নিয়ে কোনো প্রস্তুতি নেই। যেমন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতো প্রতিষ্ঠানের সারাবছর ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রস্তুতি থাকতে হবে। ঘূর্ণিঝড় ফণীর ৩৬ ঘণ্টা আগে থেকে পাথরঘাটায় বিদ্যুত্ ছিল না। ৮,০০০ কিলোমিটারের মতো বেড়িবাঁধ সংস্কারের প্রয়োজন ছিল এই ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য।

বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশনের এএইচএম বজলুর রহমান বলেন, বাণিজ্যিক এফএম রেডিওগুলো সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী ১০ কিলোওয়াট পর্যন্ত সম্প্রচার ক্ষমতা সুবিধা পাচ্ছে, অথচ অলাভজনক কাজে নিয়োজিত কমিউনিটি রেডিও যারা জনগণের তথ্য সেবায় নিয়োজিত তাদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ২৫০ ওয়াট। এই ক্ষমতা দিয়ে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত সম্প্রচার করা যায়। বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড়েরর সময় তারা যাতে অন্তত ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত সম্প্রচার করতে পারে সেজন্য তাদের সম্প্রচার ক্ষমতা ১০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের বদরুল আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেবার সময় শুধু জমির মালিকের কথা বিবেচনা না করে বর্গাচাষির কথা আগে বিবেচনা করতে হবে। কারণ, জমিতে বিনিয়োগ বর্গাচাষিই করে থাকে, অথচ বর্তমান ব্যবস্থায় উপকৃত হচ্ছে অনুপস্থিত ভূমি মালিক।

সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনাকালে কোস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০ যেভাবে বলা আছে সেই ভিত্তিতে প্রবৃদ্ধির জন্য অবকাঠামোর পাশাপাশি জলবায়ু মোকাবিলা সংক্রান্ত অবকাঠামোও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গড়ে তুলতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারকে বিদেশি সাহায্যের আশায় বসে না থেকে নিজস্ব সম্পদ দিয়েই যাত্রা শুরু করতে হবে। আরো বক্তব্য রাখেন কোস্ট ট্রাস্টের উপ-পরিচালক সৈয়দ আমিনুল হক। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কোস্ট ট্রাস্টের বরকত উল্লাহ মারুফ এবং সূচনা কোস্ট ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক বরকত উল্লাহ মারুফ, কোস্টের মোস্তফা কামাল আকন্দ।