পাঁচ বছর আগে নির্মিত বান্দরবানের নীল দিগন্ত পর্যটনকেন্দ্র দুই বছর বন্ধ থাকার পর আগামী এপ্রিল মাসে ফের চালু হচ্ছে। ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই বান্দরবান জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এবং থানচি উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় নীল দিগন্ত পর্যটনকেন্দ্রটি চালু হয়। বান্দরবান জেলা সদর থেকে অর্ধশত কিলোমিটার দূরে এবং নীলগিরি পর্যটন রিসোর্টের ৫ কিলোমিটারে বান্দরবান-থানচি সড়কের জীবননগর এলাকায় নীল দিগন্ত পর্যটনকেন্দ্রটি অবস্থিত।
তবে এলাকাটি থানচি উপজেলায় হওয়াতে উপজেলা প্রশাসন এটি পরিচালনা করছে। ২০২০ সালে করোনা শুরু হলে সারা দেশের ন্যায় এটিও বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে নীল দিগন্ত পর্যটনকেন্দ্রের অবকাঠামোসহ অনেক কিছুই নষ্ট হয়ে গেছে।
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউল গণী ওসমানী জানান, পর্যটন কেন্দ্রটি চালুর পর পর্যটনপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছিল। কিন্তু করোনার কারণে সরকারি নির্দেশে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন পরিস্হিতি স্বাভাবিক হওয়ায় নীল দিগন্তকে নতুনভাবে সাজিয়ে পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১০ এপ্রিল থেকে এটি চালু করা হবে। নীল দিগন্ত থেকে নীল আকাশ, মেঘ ও সবুজ পাহাড়ের দৃশ্য দেখার সুযোগ থাকায় পর্যটন মৌসুমে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরিজী জানান, করোনা পরিস্হিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসার কারণে নীল দিগন্ত পর্যটনকেন্দ্র চালু করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিন দিনের টানা ছুটিতে বান্দরবানের সব রিসোর্ট, পর্যটন হোটেল-মোটেল, আগে থেকেই বুকিং হয়ে পরিপূূর্ণ হওয়াতে জেলা প্রশাসক সন্েতাষ প্রকাশ করেন। জেলা প্রশাসক বলেন, আমি এক বছর আগে বান্দরবানের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেঘলায় কায়াকিং বোট যুক্ত হয়েছে। প্রান্িতক লেকে কায়াকিং বোটের পাশাপাশি বেশ কিছু সোলার বোটও দেওয়া হয়েছে। মেঘলায় দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য এবং প্রথমবারের মতো নারীদের জন্য মাতৃছায়া নামে ব্রেস্ট ফিডিং জোন করা হয়েছে। সেখানে বিশ্রাম নেওয়া একজন মা পরম যত্নে তার শিশুকে জড়িয়ে রাখার একটি ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ মাতৃস্নেহের আবহ তুলে ধরা হয়েছে। মায়েরা তার বাচ্চাকে দুগ্ধ পান করাতে পারেন এবং নারীদের নামাজ পড়ার ব্যবস্হা রাখা হয়েছে। বান্দরবানের বাসিন্দা বা দেশি-বিদেশি পর্যটক কাউকে যাতে হয়রানির শিকার হতে না হয় সে ক্ষেত্রে জেলার সব পর্যটন স্পটগুলোতে আগের তুলনায় সেবা অনেক গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
চন্দ্র পাহাড়ের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা নতুন নীল দিগন্ত পর্যটনকেন্দ্রটি থেকে দেশের সর্বোচ্চ পর্বত কেউক্রাডং, তাজিংডং রেঞ্জ দেখা যায়। এছাড়া দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ পাহাড় শ্রেণি ও বর্ষায় মেঘ বৃষ্টি আর রোদের মিতালিও চোখে পড়বে নীল দিগন্ত থেকে। প্রায় সাড়ে তিন একর জায়গার ওপর পর্যটনকেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে ভিউপয়েন্ট, হাঁটার পথ, গোলঘর, ক্যান্টিন, শোচাগার, টিকেট কাউন্টার ও অনন্য নির্মাণশৈলীর প্রবেশদ্বার রয়েছে।