বুধবার, ৩১ মে ২০২৩, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

গুরুদাসপুরে হঠাৎ বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ

আপডেট : ০৮ মে ২০২২, ১৭:০২

গুরুদাসপুরে হঠাৎ বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। ৫০ শয্যার হাসপাতালে শয্যা সংকট হওয়ায় আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালের মেঝেতেই চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৫০ জন রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে নারী-শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোজাহিদুল ইসলাম বলছেন, মার্চ-এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া অতিরিক্ত গরমের ফলে ব্যাকটেরিয়াল ও ভাইরাসজনিত রোগ দেখা দিচ্ছে। একারণে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি।

হাসপাতালের আঃন্তবিভাগ তথ্যমতে, ১২ এপ্রিল থেকে গতকাল ৮ মে রবিবার দুপুর পর্যন্ত ৯০ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে শিশু রয়েছে ১২ টি। এছাড়া গত ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত ২২৮ জন রোগী ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
হাসপাতালের পরিসংখ্যান মতে, শীতের মাঝামাঝি অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত ১৬৬ জন  রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এরমধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের নিচের শিশু ছিল ৮৯ জন। 

হাসপাতালের সেবিকা ফিরোজা আক্তার ইত্তেফাককে জানান, জানুয়ারি থেকে গতকাল ৮ মে পর্যন্ত টানা ৪ মাস ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কয়েক শ রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ঋতু ভিত্তিক আবহাওয়া পরিবর্তন জনিত কারণ ছাড়াও খাবারের সঙ্গে পেটে  জীবাণু প্রবেশ করায় দীর্ঘ সময় ধরে ডায়রিয়া প্রভাব ফেলছে। এসব রোগী পরিপূর্ণ সুস্থ হতে সময় লাগছে ২ থেকে ৫ দিনের মতো।

৫ বছর বয়সি শিশু রুদ্রকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকা সেলিনা আক্তার জানালেন, তার শিশুটি ঈদের পর থেকেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। গ্রাম্য চিকিৎসায় উন্নতি না হওয়ায় শনিবার দিবাগত রাতে তারা শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। হাসপাতালে শয্যা সংকট হওয়ায় প্রসূতি বিভাগের মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। চিকিৎসকরা নিয়মিত চিকিৎসা দিলেও শিশুটির অবস্থা আগের চেয়ে খারাপ হচ্ছে।

ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী রিতা খাতুন জানায়, রাতের খাবার খাওয়ার পর থেকে রাতভর পাতলা পায়নার সাথে একাধিকবার বমি হয়েছে। বাধ্য হয়ে আজ সকালে (গতকাল) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় শয্যা পায়নি সে। তাই বাধ্য হয়ে মেঝেতেই চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে।

গুরুদাসপুর  উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মুজাহিদুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, অতিরিক্ত গরমে বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে।  বিশেষ করে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই বেশি। অতিরিক্ত রোগীর কারণে ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে বেশ কয়েকদিন ধরে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। তবুও সাধ্যমত চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

ইত্তেফাক/জেডএইচডি