ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটছে সকাল থেকেই। এ নিয়ে বেশ কয়েকদফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুলার রোড, শহীদ মিনার, কার্জন হল এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ নিয়ে আতঙ্কে আছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, কার্জন হল, পলাশী, শহীদ মিনার, ফুলার রোডে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মহড়া দিচ্ছেন। তাদের হাতে বাঁশ, লোহা, হকিস্টিক, রামদা দেখা যায়। অন্যদিকে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা চাখারপুল, বকশিবাজার, আনন্দ বাজার, মেডিকেলের দিকে অবস্থান নিয়েছেন। এই এলাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের অবস্থানও নেই। কার্জন হল অংশে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব বাস পার্কিংয়ে রাখা হতো সেগুলো সরিয়ে মল চত্ত্বরে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান হাবিব জানান, সকালে ক্লাস করতে এসে দেখি ছাত্রলীগ-ছাত্রদল মারমুখী অবস্থানে রয়েছে। পরে সাড়ে নয়টার দিকে সংঘর্ষের কথা শুনতে পাই। পরে তা সারা ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে। আমরা ক্লাস থেকে বের হতেও ভয় পাচ্ছি। পুরো ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
ক্যাম্পাসে হামলার বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কোনো সংঘর্ষের বিষয়ে জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনার বিষয় আমার জানা নেই। আমি প্রক্টর মহোদয়কে বলে দিচ্ছি। তিনি যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানীকে বেশ কয়কবার কল দিলেও তিনি সাথে রিসিভ করেননি। দপ্তরে গিয়েও খুঁজে পাওয়া যায়নি প্রক্টরকে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ সূত্র জানিয়েছে, ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মীকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এর মধ্যে দুয়েকজন রক্তাক্ত অবস্থায় ছিলেন।
সম্প্রতি ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটির নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মিছিল-সমাবেশও করেছেন। তবে টিএসসির পাদদেশে ছাত্রদলের কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তির অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের বিরুদ্ধে।
ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের দাবি, সেই অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির দিকে যাচ্ছিলেন তারা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। এসময় শহীদ মিনার এলাকায় কিছু লোক তাদের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করেন। মুহূর্তেই মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে কয়েকজনকে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপালে নেওয়া হয়।
এ ঘটনার পর থেকেই ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
হামলায় ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসার মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন, ঢাবি শাখার যুগ্ম-আহবায়ক এজাজুল কবির জুয়েল, জগন্নাথ হলের সাবেক আহ্বায়ক ও ঢাবি শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সজীব মজুমদার, আহ্বায়ক সদস্য মানসুরা আলমসহ ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হন বলে দাবি করেন সংগঠনটির এক নেতা। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।