শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ভাণ্ডারিয়ায় নানা আয়োজনে মানিক মিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা

আপডেট : ০১ জুন ২০২২, ২১:৫২

পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় নানা আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধায় উপ-মহাদেশের প্রখ্যাত কালজয়ী সাংবাদিক, মোসাফির কলাম লেখক, জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত বিশ্বের সাহসী সাংবাদিক এবং দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ৫৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। 

এ উপলক্ষে গতকাল বুধবার জাতীয় ও কালো পতাকা উত্তোলন, উপজেলা সদরের রিজার্ভ পুকুর পার জেপির উপজেলা দলীয় কার্যালয় সম্মূখে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার মূর‌্যালে উপজেলা জাতীয় পার্টি-জেপি ও তার অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে পর্যায়ক্রমে জাতীয় পার্টি-জেপি ও তার অঙ্গসংগঠন, প্রেসক্লাব, বেসরকারি সামাজিক উন্নয়ন সংগঠন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু গ্যালারি, ইত্তেফাক পাঠক ফোরাম, বিশ্ব হিন্দুপরিষদ, হিন্দু,বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্যপরিষদ, পূজা উদযাপন পরিষদ , ড্রিম বাংলা ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন পর্যায়ের নের্তৃবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

বুধবার রাতে জাতীয় পার্টি-জেপি ও তার অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে ভাণ্ডারিয়া পৌর শেখ কামাল  অডিটরিয়ামে আলোচনাসভা, মিলাদ মাহফিল ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি-জেপির উপজেলা সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহিবুল হোসেন মাহিমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক সীমা রানী ধর। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আমান উল্লাহ আমান, মজিদা বেগম মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবু জাফর, আতরখালী মানিক মিয়া কলেজের অধ্যক্ষ দেলোয়ারা জেসমিন, ভাণ্ডারিয়া বন্দর সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.মাহমুদ চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফাইজুর রশিদ খশরু জোমাদ্দার, পৌর কাউন্সিলর মো. গোলাম সরওয়ার জোমাদ্দার, ওয়ার্কার্স পার্টির পিরোজপুর জেলা সভাপতি খান মো. রুস্তুম আলী,ওসি তদন্ত মো. মেহেদী হাসান,জেপি নেতা ইউসুফ আলী আকন,ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান টুলু, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদ এহসাম হাওলাদার প্রমুখ।

পৃথক এসকল অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা খান এনায়েত করিম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলামস উজ্জল তালুকদার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান মৃধা, জাতীয় পার্টি-জেপির উপজেলা সদস্য সচিব এবং ধাওয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছিদ্দিকুর রহমান টুলু, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এনামুল কবির টিপু তালুকদার, ,মো. ইউসুফ আলী আকন, মো. শফিকুল আলম খোকন সিকদার,শাহারিয়ার হোসেন দুলাল মল্লিক, জেপি নেতা হুমায়উন কবির বাদল, উপজেলা আহবায়ক মো. রেজাউল হক রেজভী জোমাদ্দার, উপজেলা স্বেচ্ছা সেবক পার্টির আহবায়ক মো. মনির সরদার, যুবসংহতির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ সরদার,উপজেলা ছাত্রসমাজের আহবায়ক মো. সালাহ্উদ্দিন রাহাত  জোমাদ্দার,সদস্য সচিব জহির উদ্দিন অন্তুু সরদার,মো. মেহেদী হাসান রাজু, মাহাবুব শরীফ শুভ প্রমুখ। পূজা উ্দযাপন পরিষদের উপজেলা সভাপতি কিরন চন্দু বসু, হিন্দু,বৌদ্ধ, খৃষ্টাণ ঐক্যপরিষদের বাবুল চন্দ্র রায়, বিশ্ব হিন্দুপরিষদের দিপংকর দাস, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু গ্যালারির শশাঙ্ক শেখর চক্রবর্তী ,প্রেসক্লাবের হাসান ইমাম পান্না,মো.ছগির হোসেন, মামুন হোসেন, ইত্তেফাক পাঠক ফোরামের সুকুমার দাস, দিপু সাহা,বাজার ব্যাবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুস সালাম খোন্দকার,সাধারণণ সম্পাদক মো. মোশারফ সিকদার, সরকারি,বেসরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিকদলের নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক,সাংবাদিক,পৌর কাউন্সিলরগণ  সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ দোয়ায় শরিক হন। দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন ভাণ্ডারিয়া শাহাবুদ্দিন সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা মো. ফারুক হোসাইন। 

এদিন দুপুরে ভাণ্ডারিয়া মজিদা গেবম মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের একাদশ ও দ্বাদশ শেণির ২০শিক্ষার্থী মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় কোরআন পাঠ করেন। পরে আলোচনা সভা ,মিলাদ মাহফিল ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টি-জেপির উপজেলা যুগ্ন আহবায়ক কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও পৌর কাউন্সিলর মো. গোলাম সরওয়ার জোমাদ্দারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবুজাফর প্রভাষক আব্দুল হালিম হাওলাদার ও মো. মুরাদ হোসেন প্রমুখ। দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন প্রভাষক মাওলানা মো. নুরল হক। 
বাদ আছর তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার গ্রামের বাড়ি পূর্ব-ভাণ্ডারিয়া মিয়া বাড়ি জামে মসজিদ কমপ্লেক্সে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও তার ভ্রাতুষপুত্রগণের উদ্যোগে আলোচনা সভায় পৌর কাউন্সিলর মো. গোলাম সরওয়ার জোমাদ্দারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন,মজিদা গেবম মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবুজাফর, জাতীয় পার্টি-জেপির উপজেলা সদস্য সচিব এবং ধাওয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছিদ্দিকুর রহমান টুলু,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো.মশিউর রহমান মৃধা, প্রভাষক আব্দুল হালিম হাওলাদার ,জেপি নেতা মো. জামাল উদ্দিন লিটন, উপজেলা ছাত্রসমাজের আহবায়ক মো. সালাহ্উদ্দিন রাহাত জোমাদ্দার, পৌর ছাত্রসমাজের আহবায়ক মেহেদী হাসান রাজু প্রমুখ।  পরে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ মাহফিল এবং দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলান আবুল কাসেম। 

এদিন বাদ জোহর ভাণ্ডারিয়া পৌর শহরের মানিক মিয়া বাইতুল আমান জামে মসজিদে উপজেলা জাতীয় পার্টি নেতা মো. জামাল উদ্দিন লিটনের উদ্যোগে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা আব্দুল মালেক। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু গ্যালারির উদ্যোগে বাদ আছর উত্তর পূর্ব-ভাণ্ডারিয়া মোল্লা ছোমের উদ্দিন জামে মসজিদে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার রুহের মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ মাহফিল এবং দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মো.নুরমোহাম্মদ ক্বারী ।

গতকাল সকালে মজিদা বেগম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনুরূপ কর্মসূচিতে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাতীয় পার্টি -জেপির উপজেলা সিনিয়র যুগ্ম আহবাক ও সাকেব উপজেলা চেয়ারম্যান মাহিবুল হোসেন মাহিমের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. মনির হোসেন হাওলাদার,শিক্ষক মো. আবুয়াল হোসেন,প্রবীর কুমার হাওলাদার প্রমুখ। পরে মানিক মিয়ার রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা ইউনুস আলী। 

এ সকল স্থানে পৃথকভাবে আলোচনা সভায় আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ,বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন রাজজনৈতিক দলের জেষ্ঠ্য নেতারা তাদের বক্তব্যে বলেন ,স্বাধীকার আন্দোলনে ছদ্মনামে ক্ষুরদার মোসাফির কলাম লেখনির মাধ্যমে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মধ্যে জনমত গড়তে গণমূখী নির্ভীক সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার অবদান অনস্বীকার্য,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মত্যাগ ,মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র ,দেশ স্বাধীনে তৎকালীন পাকহানাদার রিবোধী জনমত গড়তে ছদ্মনামে মানিক মিয়ার ক্ষুরধার লেখনিতে  দৈনিক ইত্তেফাকের অবদান সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। জাতির পিতা খ্যাত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই তার লেখা “আমার প্রিয় মানিক ভাই” বইয়ে উল্ল্যেখ করেছেন, মানিক ভাই আমার বড় ভাই ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমার ডান হাত ভেঙ্গে গেল ! দেশ স্বাধীনে তিনি যেমন তার লেখনী দিয়ে জনমতগড়ার কাজ করেছেন তেমনি আমাকে নানা সময়ে সঠিক বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেছেন। স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতির যে চর্চা শুরুর আংশকা করা হচ্ছে তাতে এক সময় নতুন প্রজন্ম দেশ স্বাধীনের সঠিক ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত থাকবে। তাই এখন থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস সর্ম্পকে তরুন রাজনীতিকদের স্ব উদ্যোগী হয়ে নতুন প্রজন্মকে জানাতে স্ব স্ব অবস্থান থেকে কাজ করার আহবান জানানো হয়।

ইত্তেফাক/জেডএইচডি