দেশের প্রখ্যাত ড্রামার-কম্পোজার মানিক আহমেদ। মানিক একমাত্র তারকা, যাকে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক কোনো ইনস্ট্র~মেন্ট কোম্পানি (রোল্যান্ড) ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিয়োগ দেন। জনপ্রিয় এই তারকা বর্তমান সময়ে মিউজিশিয়ানদের অবস্থা, নিজের বর্তমান কাজ ও পরিকল্পনা নিয়ে তিনি কথা বললেন ইত্তেফাকের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এ এম রুবেল
বর্তমানে কোন কাজগুলো নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
বছরের এই সময়টাতে কনসার্ট একটু কম হয়, যে কারণে কনসার্ট ব্যস্ততা আগের মতো নেই। তবে এই সময়ে সিনিয়র-জুনিয়র শিল্পীদের নিয়ে কিছু গান কম্পোজিশন করার পরিকল্পনা চলছে। মিউজিশিয়ানরা যত ভালোই বাজাক তারা আড়ালে থেকে যান। সেই জায়গা থেকে মনে হলো কিছু মানসম্পন্ন গান কম্পোজ করে গেলে হয়তো সেই গানের মাধ্যমে চলে যাওয়ার পরও বেঁচে থাকা যাবে।
লাইভ মিউজিক ছাড়া তো মিউজিশিয়ানরা অনেকটাই বেকার হয়ে পড়েন। করোনাকালীন এটা আরও বেশি দেখা গেছে। আপনার চোখে এই সময়গুলো কেমন?
করোনার সময় তো অনেকেই জীবনের তাগিদে এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যুক্ত হয়েছেন। অনেকে ঢাকা ছেড়েও চলে গেছেন। কিছু সিনিয়র ঘরে বসে হয়তো দু-চারটে কাজ করে কোনোরকমে দিন পার করেছি।
সেই জায়গায় বর্তমানে দেশের মিউজিশিয়ানদের অবস্থা কেমন দেখছেন?
দেশের মিউজিশিয়ানদের অবস্থা এখন অনেক ভালো। নতুন-পুরনো অনেকেই ভালো মিউজিক করছেন। তবে কিছু তরুণ মিউজিশিয়ান আছেন, যারা কয়েকটি কাজ করেই গাড়ি-বাড়ির মালিক হতে চাচ্ছেন। টাকা আয় করা আর ভালো মিউজিশিয়ান হওয়া এক না। টাকা দরকার আছে, তবে কাজের মানও দেখতে হবে।
এখন কোক স্টুডিও, উইন্ড অব চেঞ্জের মতো বড় বড় অনেক ইভেন্ট হচ্ছে। এতে শীর্ষ মিউজিশিয়ানদের সুযোগ কেমন তৈরি হচ্ছে?
এ ধরনের কাজের ক্ষেত্রে তো মিউজিশিয়ানদের কাজের পরিধি বাড়েই। আমরাও চাই এ ধরনের প্লাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত হতে। বিদেশি মিউজিশিয়ানের সঙ্গে দেশের সিনিয়র মিউজিশিয়ানরা প্লাটফর্মগুলোতে কাজ করলে কাজের মান বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুনরাও অনেককিছু শিখতে পারবে।
নিয়মিতই দেশের বাইরে ট্যুর করছেন। ট্যুরের কোন বিষয়গুলো বিশেষ মনে হয়?
দেশের বাইরে কনসার্ট করতে গেলে সেখানকার বাঙালিদের আতিথেয়তা সত্যি মুগ্ধ করে। যখন তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেন তখন মনে হয় তারা নিজেকে উজার করে দিতে চান। মনে হয়, তারা নিজের পরিবারের কাউকে কাছে পেয়েছেন।
কিন্তু ইদানিং বেশিরভাগ শিল্পী বিদেশ গেলে ট্র্যাক নিয়ে যান, সেশন মিউজিশিয়ানদের নিয়ে যান না। এ বিষয়টি নিয়ে কী বলবেন?
আয়োজকরা এই বিষয়টির সমাধান করতে পারেন। তারা যদি আগেই বলে দেন যে, এই ক’জন মিউজিশিয়ান নিয়ে যেতে হবে এবং শিল্পী-মিউজিশিয়ানরাও যদি কিছুটা ছাড় দেন তাহলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না।
আপনার ছেলেও মিউজিকের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। তাকে নিয়মিত পাওয়া যাবে কি-না?
আসলে ভালোবাসা থেকে ও পড়াশোনার পাশাপাশি নিয়মিত মিউজিক করছে। গতবছর সড়ক দুর্ঘটনায় আমার ভাই হানিফ চলে যাওয়ার দু-তিন মাস আগে আমার ছেলেকে ড্রাম গিফট করে। হানিফের কারণেই ওর এই যাত্রা শুরু। অথচ আজ আমার ভাই নেই।