শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শেবাচিমে ইন্টার্নদের কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ, মেয়রের হস্তক্ষেপে শান্ত 

আপডেট : ১১ জুন ২০২২, ২৩:৪২

নিজেদের নিরাপত্তার জোরদার ও হামলার ঘটনার বিচার দাবীতে ডাকা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলের  (শেবাচিম) ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। শনিবার (১১ জুন) রাত ১১টার দিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর হস্তক্ষেপে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন শেবাচিমের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

এর আগে শনিবার (১১ জুন) রাত ৮টার দিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের নিরাপত্তার জোরদার ও তাদের উপর হামলার ঘটনার বিচার দাবী করে এ কর্মসূচির ডাক দেয়। এসময় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলের (শেবাচিম)  জরুরি বিভাগসহ সবগুলো গেটে তালা মেরে দেয় বিক্ষুব্ধ ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এর প্রতিবাদে মৃত কলেজ ছাত্রের স্বজন ও এলাকাবাসীরা হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে রাত ১০টার দিকে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় তারা দাবী করে  মৃত্যু কলেজ ছাত্রের দুই স্বজনকে আটক করা হয়েছে। প্রায় ঘন্টাব্যাপী ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মৃত কলেজ ছাত্রের স্বজনদের পাল্টাপাল্টি এই কর্মসূচী চলতে থাকে। রাত ১১টার দিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে হাসপাতালের স্বাভাবিক চিকিৎসা ব্যবস্থা ও সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

সড়ক অবরোধকারী মৃত কলেজ ছাত্রের স্বজনদের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ - ইত্তেফাক 

এর আগে বিকেলে সড়ক দুর্ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক কলেজ ছাত্রর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শেবাচিম হাসপাতালে রোগীর স্বজন, বন্ধু ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। রোগীর স্বজনরা দাবী করেন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে নেয়ার পরও চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। অপরদিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দাবী করেন প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে আহত ব্যক্তির এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি তারপরও আমাদের উপর হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকেই মেডিকেল জুড়েই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকরা পরিচালকের কক্ষে গিয়ে বিচারের দাবী জানায়। 

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলের (শেবাচিম) জরুরী বিভাগ সহ সবগুলো গেটে তালা দিয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা - ইত্তেফাক 

মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ রাকিন বলেন, সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হয়েছে ঐ রোগীকে বাঁচানোর জন্য। তারপরও এসে মৃতের স্বজন ও বন্ধুরা আমাদের উপর হামলা করেছে। তারা হুমকি দিয়েছে আমাদের। এরকম ঘটনা অহরহ ঘটছে আমরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে কাজ করছি। আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে আর কাজে ফিরবো না। 

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলের (শেবাচিম) সামনের সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয় মৃত কলেজ ছাত্রের স্বজনরা - ইত্তেফাক 

হাসপাতাল পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত তিনজন মুমুর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর মধ্যে যে মারা গেছে তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছিলো। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের উপর রোগীর স্বজনদের এমন আচরণ কাম্য নয়। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। রাতে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ আশ্বস্ত করলে সকলেই শান্ত হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে তিনি জানান। 

এদিকে হাসপাতালের সবগুলো গেট তালাবদ্ধ থাকায় রোগী ও স্বজনরা চরম বিপাকে পড়ে। গুরুতর অবস্থায় ভর্তি হতে আসা রোগীরা হাসপাতালের সামনে আসলেও তাদেরকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি এবং ভর্তিকৃত রোগীরাও কয়েক ঘন্টা কোনো চিকিৎসা সেবা পাননি। 

 

 

 

 

ইত্তেফাক/ ইআ