শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, বন্যাকবলিত বিভিন্ন স্থানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

আপডেট : ২২ জুন ২০২২, ০৪:৫৩

যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এর আশপাশের জেলাগুলোর নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ডুবে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে অনেক স্থানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর:

সিরাজগঞ্জ: যমুনা নদীসহ অভ্যন্তরিণ নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিনই জেলার নতুন নতুন এলাকা বন্যাকবলিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে বাড়ি-ঘরসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিমজ্জিত হয়ে গেছে। 

কাজীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান জানান, তার উপজেলায় ইতিমধ্যেই ১৪টি বিদ্যালয় বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যাকবলিত যে এলাকায় উঁচু ভিটা আছে সেখানে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বাকিগুলোতে ক্লাস বন্ধ রয়েছে। শাহজাদপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক জানান, তার উপজেলায় ২৫টি বিদ্যালয়ের চারদিকে পানি হয়েছে। 

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আপেল মাহমুদ জানান, তার উপজেলার আটটি বিদ্যালয় বন্যাকবলিত হয়েছে।

দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর): দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপত্সীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পনিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার পরিষদসহ দেওয়ানগঞ্জের পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ৪৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নিমজ্জিত রয়েছে ৮৫২ হেক্টর জমির ফসল। 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হালিম জানান, উপজেলার বিভিন্ন প্রথমিক বিদ্যালয় বন্যা প্লাবিত হওয়ায় ৩৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, উপজেলার ছয়টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ প্লাবিত হওয়ায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস জানান, উপজেলায় সর্বমোট ৮৫২ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): নাসিরনগরে বন্যার তলিয়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর বোনা আমন ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গ্রামীণ রাস্তাঘাট। পানির তোড়ে উপজেলার বুড়িশ্বর ও গোকর্ণ ইউনিয়নে দুইটি ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় কয়েকটি এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া উপজেলার প্রায় ৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারপাশে পানি উঠেছে। এর মধ্যে ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

নাসিরনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইকবাল মিয়া বলেন, উপজেলার ১২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭০টি বিদ্যালয়ের চারপাশে পানি উঠেছে। ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক বলেন, বন্যায় উপজেলার প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর বোনা আমন ধানী জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। 

উপজেলা সিনিয়র মত্স্য কর্মকর্তা শুভ্র সরকার জানান, উপজেলায় এই পর্যন্ত প্রায় ৭০০ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোনাব্বর হোসেন জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ৫৬টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।

সোনাতলা (বগুড়া): বগুড়ার সোনাতলায় যমুনা ও বাঙ্গালী নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় সোমবার পর্যন্ত মোট ৫৩২ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত রয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ আহমেদ। পানি উঠেছে প্রায় ১৫টি বিদ্যালয়ে। ফলে এসব বিদ্যালয়ে কমে গেছে শিক্ষার্থীদের উপস্হিতি। কোনো কোনোটিতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন জানান, ইতিমধ্যে বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ত্রাণের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে চাহিয়াপত্র পাঠিয়েছি।

ইত্তেফাক/এমএএম