নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে পাঁচটি ও সৈয়দপুর পৌরসভা এলাকায় একটিসহ মোট ছয়টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব গড়ে উঠেছে। সেখানে সপ্তাহে দুই দিন গান, কবিতা আবৃত্তি ও জেন্ডার বিষয়ে শিখছেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে সমাজসচেতন হচ্ছেন তারা। বাল্যবিয়ে, মাদকবিরোধী নানা বিষয়ে জ্ঞানার্জন করছেন ক্লাবের সদস্যরা।
জানা যায়, ৩০-৩২ জন কিশোর-কিশোরী নিয়ে গঠন করা হয়েছে প্রতিটি ক্লাব। ক্লাবে উল্লিখিত পাঠদানের জন্য নিয়োজিত রয়েছেন ১২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। এর মধ্যে তিন জন পুরুষ ও ৯ জন নারী শিক্ষক রয়েছেন। তদারকির জন্য রয়েছেন এক জন জেন্ডার প্রমোডর ও সুপারভাইজার। কাজের সার্বক্ষণিক তদারক ও দেখভাল করেন সৈয়দপুর উপজেলা নারীবিষয়ক কর্মকর্তা। সপ্তাহে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বিকেলে দুই ঘণ্টা করে ক্লাবের সদস্যরা শিখছে গান, কবিতা আবৃত্তি, জেন্ডার বিষয়সহ নানা বিষয়। সরেজমিনে উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের হাজারীহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কিশোর-কিশোরী ক্লাবে গেলে দেখা যায়, কিশোর-কিশোরীরা মনোযোগ সহকারে গান শিখছেন। এখানকার শিক্ষিকা রেহানা পারভীন জানান, এই ক্লাবের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি শত ভাগ। খুব আগ্রহ এখানকার কিশোর-কিশোরীদের। শিক্ষার্থী সায়মা বেগম, শরিফা রানী, রব্বানী ও গোলাম রসুল বলেন, আমরা আনন্দ করে গান, কবিতা শিখছি। আবৃত্তিও করছি। ফলে কোনো প্রতিযোগিতায় আমরা আর ভয় পাই না। আমাদের প্রতিষ্ঠানেও প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ভালো করছি।
উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের ময়দানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কিশোর-কিশোরী ক্লাবের শিক্ষক রওনক জামান হৃদয় জানান, তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র। লেখাপড়ার অবসরে নামমাত্র সম্মানিতে এই ক্লাবে শিক্ষকতা করছেন।
উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লানছু চৌধুরী জানান, কিশোর-কিশোরী ক্লাব আরো বাড়ানো দরকার। এই ক্লাবের মাধ্যমে তারা জানতে পারছে ৯৯৯ কল দিলে কী হয়। কি সরকারি সুযোগ-সুবিধা রয়েছে তাও জানতে পারছে। এ ব্যাপারে সৈয়দপুর নারীবিষয়ক কর্মকর্তা নূরুন্নাহার শাহজাদি জানান, ব্যাপক সাড়া ফেলেছে সৈয়দপুরের কিশোর-কিশোরী ক্লাব। ফলে তা অনেকের ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নামমাত্র সম্মানিতে শিক্ষক-শিক্ষিকারা শিক্ষাদানের মহৎ কাজ করে চলেছেন। তাছাড়া এসব ক্লাবে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। ফলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর কোনো ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই।