পদ্মা সেতু উদ্বোধণের পর রাজধানী ঢাকা থেকে সরাসরি সড়ক পথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের দ্বার উন্মোচিত হবে।
এই সেতু ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশের অন্য অঞ্চলের কৃষি বিপ্লব অনেকটা সফল হয়েছে। পিছিয়ে ছিল দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল। এর প্রধান কারণ হলো যোগাযোগের ব্যবস্থার সমস্যা। উৎপাদিত পণ্য পরিবহনে দুর্ভোগ। পদ্মা সেতুর ফলে এ অঞ্চলের কৃষি বিপ্লব সফল হবে। সেতুর কারণে কৃষি পণ্য সবচেয়ে কাঙ্খিত বাজারে দ্রুত নিয়ে যেতে পারবে। শুধু ঢাকা নয়, বরং বড় বড় জেলা শহরগুলোতেও তাদের পণ্য যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এতে গড়ে উঠবে কৃষিভিত্তিক শিল্পকারখানা। তাতে মানুষের কর্মসংস্থান হবে, বাড়বে আয়।
পদ্মা সেতুর অপর পারে শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও ফরিদপুরে রয়েছে শাকসবজি ও মসলা জাতীয় ফসল উৎপাদনের উপযোগী জমি। ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ উন্নত হওয়ায় এখানে ফসলের পচনশীলতা হ্রাস পাবে। বিভিন্ন শাকসবজি, বিশেষ করে পেঁয়াজ ও রসুনের উৎপাদন বাড়বে। এই ৩ জেলার চরাঞ্চলের বাদাম ও পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়বে। গড়ে উঠবে পাটভিত্তিক শিল্প।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে বলা হয় শস্য ভাণ্ডার। কিন্তু এই ভাণ্ডারকে এতোদিন পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভাব হয়নি। এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের ফলে সেখানে সবুজ বিপ্লব ত্বরান্বিত হবে। উচ্চ ফলনশীল ধানের আবাদ বাড়বে। এতে চাল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। বরিশাল ও পটুয়াখালীতে তরমুজের চাষ হয়। কিন্তু রাজধানীর বাজারে তা আসতে পারে না। ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় কৃষকরা তরজুম চাষে তেমন লাভবান হতো না। এখন এ সমস্যা দূর হবে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দ্রুত তরমুজ পাঠানো সম্ভব হবে।
পদ্মা সেতুর নিকটেই বাড়ি রিয়াজুল ইসলামের। তিনি জানান, পদ্মা সেতু হওয়াতে এই এলাকার জমির দাম বহুগুণ বেড়ে গেছে। সেতুর কারণে ঢাকা থেকে যোগাযোগে সময় ও ভাড়া দুটোই অনেক কম লাগবে। এখন মাওয়া ও তার আশপাশ এলাকার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারবে।