সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি ঘর হারিয়ে যাচ্ছে কালের বিবর্তনে। জেলার তাড়াশ, সলঙ্গা ও রায়গঞ্জ উপজেলার গ্রামগুলোতে গত কয়েক বছর আগেও নজরে পড়ত মাটির ঘর। প্রচণ্ড গরম ও শীতে বসবাসের উপযোগী ছিল এই মাটির ঘর। এক সময় এই এলাকার ধনী-গরিব সবাই সেই ঘরে বসবাস করতেন। তবে কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্ত হতে বসেছে মাটি দিয়ে তৈরি ঘর।
জানা যায়, তাড়াশের আট ইউনিয়নে ২৪৮টি গ্রামের মধ্যে দেশীগ্রাম ইউনিয়নের আড়ঙ্গাইল গ্রামে পাশাপাশি দুইটি পরিবারে শত বছরের পুরাতন তিনটি মাটির দেওয়ালের খড়ের চালের বসতঘর এখনো রয়েছে। এই মাটির ঘরে সালাম মণ্ডল (৬০) ও রফিক (৬২) তাদের পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।
সালাম মণ্ডল ও রফিক জানান, আরামদায়ক মাটির ঘরে দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি বিত্তবানরাও একসময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করতেন। বৃষ্টি বা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত না হলে এসব ঘর অনেক বছর পর্যন্ত টিকে থাকে বলেও জানান তারা।
তারা আরো বলেন, বর্তমানে মানুষের আধুনিক জীবনযাপনের ইচ্ছা ও আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সবাই মাটির ঘর ভেঙে টিন আর ইটের পাকা-সেমিপাকা বাড়ি তৈরি করেছেন। বিলুপ্ত হতে চলেছে মাটির ঘর।
রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের মৌহার গ্রামের নূরুল ইসলাম বলেন, প্রায় ৬০ বছর আগে এই ঘর নির্মাণ করেছিলাম। তখনকার সময়ে আমার খরচ হয়েছিল প্রায় ৬ হাজার টাকা। তিনি আরো বলেন, আমাদের এই এলাকায় মাটির ঘর অনেক রয়েছে। এখন এই ধরনের ঘর তৈরি করতে প্রায় ২৫-৩০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়।
একই এলাকার আবু হেনা মো. মোস্তফা কামাল রিপন জানান, রায়গঞ্জ এবং তাড়াশ উপজেলায় আজও অনেক মাটির ঘর রয়েছে। নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা বাপ-দাদার তৈরি করা মাটির ঘর প্রতি বছর কিছুটা মাটি দিয়ে সংস্কার করে আজও বসবাস করছেন।