বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বন্যার্তদের সহায়তায় সিলেট ও সুনামগঞ্জে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি 

আপডেট : ০১ জুলাই ২০২২, ০৯:১৩

চলতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সিলেট ও সুনামগঞ্জের জন্য এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সিলেট নগরীর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (ইমজা) মিলনায়তনে এক সভায় সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ এই দাবি জানান।

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার নেতৃবৃন্দ বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের দুর্ভোগ লাঘবে শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফেরানোর জন্য শিক্ষা উপকরণ এবং পোশাক প্রদান, ব্যবসায়ীদের বিনা সুদে ঋণ প্রদান এবং আগে নেওয়া ঋণের কিস্তি স্থগিত করা, কৃষকদের বিনামূল্যে সার বীজ ও কীটনাশক প্রদান, ২০১৭ সালের মতো আবারও বছরব্যাপী পরিবার প্রতি ৩০ কেজি চাল ও ৫০০ টাকা প্রদান এবং বিনামূল্যে গোখাদ্যের যোগান নিশ্চিত করতে হবে।

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা লিখিত বক্তব্যে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এ সময় আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন মদনমোহন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক। অনলাইনে সংযুক্ত থেকে বক্তব্য দেন দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ গওহর নঈম ওয়ারা।

এসময় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ হাজার ঘরবাড়ি সরকারি খরচে মেরামত করা এবং হাওর ও নদীর তীরবর্তী ৭০ হাজার বাড়ির ভিটা মেরামতের জন্য সরকারি তহবিল হতে পরিবার প্রতি দশ হাজার টাকা প্রদানের দাবি জানান পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার নেতৃবৃন্দ।

ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবল থেকে রক্ষা পেতে হলে আমাদের পরিবেশ সচেতন হতে হবে। তিনি দুর্গত মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। অধ্যাপক ড. জহিরুল হক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন না ঠেকাতে পারলে এ ধরনের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে আমাদের আরও পড়তে হবে।  এটি আন্তর্জাতিক ভাবে আলোচিত হতে হবে। দেন-দরবার করে আমাদের অধিকার আমাদের আদায় করতে হবে। গওহর নঈম ওয়ারা বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করা ঠিক নয়। অনেক ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। বন্যায় অনেকের কাগজপত্র ভেসে গেছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন করতে হবে।

দীর্ঘকালীন সমাধানের জন্য তারা সিলেট ও সুনামগঞ্জের সীমান্ত এলাকা থেকে শুরু করে ভৈরব পর্যন্ত ব্যাপক ভিত্তিতে কার্যকর নদী খনন, সিলেট ও সুনামগঞ্জে শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা, হাওরের গ্রামগুলোকে ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করার জন্য গ্রাম সুরক্ষা দেওয়াল নির্মাণ করা এবং কৃষকদের জন্য শস্যবীমা চালু করার দাবি করেন।

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পীযূষ পুরকায়স্থ টিটুর পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন তাহিরপুরের দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ইউনুস আলী, তাহিরপুর সমিতি-সিলেট এর সভাপতি তারা মিয়া ও অধ্যাপক জ্যোতিষ মজুমদার। এসময় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

ইত্তেফাক/এসটিএম