বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

একই স্থানে বিএনপি- আওয়ামী লীগের কর্মসূচি, ১৪৪ ধারা জারি

আপডেট : ০২ জুলাই ২০২২, ১১:৩৫

ফেনীর ফুলগাজীতে বিএনপির ত্রাণ বিতরণের প্রস্তুতি সভায় সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের হামলায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। শুক্রবার (১ জুলাই) বিকেলে ফুলগাজী উপজেলার পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে, ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে একই সময়ে একই স্থানে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি থাকায় ওই স্থানে আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। তাই দৌলতপুর গ্রামে ২ জুলাই থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছেন ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুন নাহার।

ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, ‘ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে বন্যার্ত অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণের জন্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খোন্দকার মোশারফ হোসেন শনিবার (২ জুলাই) আসার কথা রয়েছে। ওই অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রস্তুতি বৈঠকে বসেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এসময় আওয়ামী ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় বিএনপির অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত হন। চিকিৎসা নিতে আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলেও সেখানেও চিকিৎসাধীন নেতাকর্মীদের ওপর পুনরায় হামলা চালানো হয়।’

তিনি জানান, হামলায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ভিপি ফখরুল আলম স্বপন, সদস্য সচিব আবুল হোসেন, যুগ্ম-আহবায়ক গোলাম রসুল মজুমদার গোলাপ, নুরুল হুদা শাহিন, ফুলগাজী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আকবর হোসেন, সদস্য মোহাম্মদ দিদার, শিমুল, রবিউল হক বাবু ও উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি রতন মোক্তারের নাম জানা গেছে। ফুলগাজী উপজেলা যুবদলসহ অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মীকে মারাত্মকভাবে আহত করে।

ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আনন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হারুন মজুমদার বলেন, ‘ফুলগাজীতে এখন বন্যা নেই। ত্রাণ দেওয়ার কথা বলে বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে পদ্মা সেতুসহ বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এসময় যুবলীগ নেতা মিজানকে তারা মারধর করে। এ খবর শোনার পর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তবে আমরা নিয়ন্ত্রণ না করলে বড় ধরনের ঘটনা হতো।’

ফুলগাজী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ মঈন উদ্দীন জানান, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মাঝে বিকেলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুন নাহার বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ফুলগাজী শাখা ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ফুলগাজী শাখা কর্তৃক ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি গ্রহণ করেন। ১ জুলাই বিকালে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উভয় দলের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং উভয় দলের মাঝে সংঘর্ষ ঘটে, যার পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকজন আহত হন। উভয় দলের একই সময়ে একই স্থানে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি থাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা রয়েছে মর্মে ফুলগাজী থানার অফিসার ইনচার্জ অবহিত করেন এবং ওই স্থানে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের সম্ভবনা রয়েছে। এমতাবস্থায় ২ জুলাই ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হলো।’

ইত্তেফাক/মাহি