বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কেরানীগঞ্জে স্বাস্থ্যসেবার নামে প্রতারণা, বৈধ কাগজপত্র নেই ২২ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের

আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২২, ০৩:৪৮

ঢাকার কেরানীগঞ্জে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ৬৪টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স শাখার দেওয়া তথ্যে জানা যায়, এদের মধ্যে ৪২টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে নিবন্ধন ও লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। বাকি ২২টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই।

কেরানীগঞ্জে দুটি মডেল ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকায় প্রায় ১৫ লাখ মানুষের বসবাস। চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য সরকারি দুটি হাসপাতাল রয়েছে। এদের মধ্যে একটি ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অপরটি জিনজিরা ২০ শয্যা সরকারি হাসপাতাল। হাসপাতালে দুটিতে প্রতিদিন আউটডোরে ২০০ থেকে ৩০০ মতো রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও নামমাত্র ওষুধ দেওয়া হয়। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু হাসপাতাল ব্যবসায়ী কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ, ইকুরিয়া, বসুন্ধরা রিভার ভিউ, আব্দুল্লাহপুর, চুনকুটিয়া, কদমতলী, জিনজিরা, কালিন্দী, রামেরকান্দা, রোহিতপুর, আঁটি বাজার, কলাতিয়া ও খাড়াকান্দি এলাকায় ৬৪টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে বিনা মূল্যে চক্ষু পরীক্ষা করার মাইকিং করে এলাকাবাসীকে আকৃষ্ট করে তাদের ক্লিনিক ও হাসপাতালে এনে ৫০০ টাকার বার্ষিক চিকিত্সার কার্ড রেজিস্ট্রেশন করে দেয়। প্রসূতি মায়েদের সিজারিয়ানের জন্য দেওয়া হয় বিশেষ মূল্যে সিজারিয়ান নিবন্ধন কার্ড। এ কারণে এলাকাবাসীর অনেকে সরকারি হাসপাতালে না গিয়ে এসব ক্লিনিকে এসে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা করান।

অভিযোগ রয়েছে, অধিকাংশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডিউটি ডাক্তার থাকেন না। এ সুযোগ নার্স ও আয়াদের ডাক্তার সাজিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। ডিজিটাল স্কোয়ার ক্লিনিক, মেরীস্টোপ, আল বারাকা, কদমতলী জেনারেল হাসপাতাল, ল্যাব ফোর ও দ্বীন আধুনিক হাসপাতালে অনেক ভুয়া ডাক্তার ও নার্স রয়েছে। এসব ভুয়া ডাক্তার ও নার্স দিয়ে চলছে ঐসব ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক। এ কারণে প্রতারিত হচ্ছে অনেক রোগী এবং অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করছেন ভুল চিকিৎসা পেয়ে। জীবনহানির মতো ঘটনাও ঘটছে অনেকের। ইউএনও মেহেদী হাসান ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান জানান, যেসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বৈধ কাগজপত্র নেই তাদের বিরুদ্ধে শিগ্গিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

উল্লেখ্য গত ২৮ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশব্যাপী অবৈধ ক্লিনিকগুলোতে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ মে নতুন আগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে লাইসেন্স ও ডিউটি ডাক্তার না থাকায় পাঁচটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অভিযানে আতিকুল হক নামে একজন ভুয়া ডাক্তারকে ছয় মাসের সাজা দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ইত্তেফাক/ইআ