শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

জাতীয় জাদুঘরে দর্শনার্থীদের ভিড়

আপডেট : ১২ জুলাই ২০২২, ১৩:১২

ঈদুল আজহা উদযাপন শেষে তিন দিন পর আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় খুলেছে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘর। প্রথম দিনই দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ করা গেছে। প্রধান ফটকের নিরাপত্তাকর্মীরা বলছেন, গেট খোলার আগে থেকেই দর্শনার্থীরা এসে অপেক্ষা করছেন। নিয়ম মেনে সবাই ভেতরে প্রবেশ করছেন। 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দর্শনার্থীদের বেশির ভাগই শিশু-কিশোর। তারা পরিবারের বাবা-মা ভাই-বোনের সঙ্গে এসেছে। প্রথমে গেটের বাইরে থেকে টিকিট সংগ্রহ করছেন, মাস্ক পরে গেট অতিক্রম করছেন, তারপর ভেতরে গিয়ে ব্যাগ কাউন্টারে জমা দিয়ে মূল মিউজিয়ামে প্রবেশ করছেন। উৎসুক শিশু-কিশোররা মিউজিয়ামে এসে মনে হচ্ছে বাসার চাল দেয়ালের বন্দিজীবন থেকে মুক্তি পেয়েছে। 

কাউন্টারে ব্যাগ রেখে মিউজিয়ামে যাচ্ছেন তারা

ছয় বছরের শিশু মুনিয়া উচ্ছ্বাস নিয়ে বলে, ‘বাবা-আর ভাইয়ার সঙ্গে জাদুঘরে এসেছি। আজ শুধু ঘুরবো, খাবো। গতকালকে বাসার পাশে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরেছি। এই দেখো তিনটা টিকিট কিনেছি।’

মুনিয়া ভাই সাকিব (১৪) বলেন, ‘এবার ঈদে অনেক মজা হয়েছে। আব্বু-আম্মুর সঙ্গে অনেক ঘুরেছি। আজ এখানে আসছি। আমি এর আগে এখানে আসিনি। পুরো মিউজিয়াম ঘুরে দেখবো। আমাদের মতো স্কুল পড়ুয়াদের সব দর্শনীয় স্থানে যাওয়া উচিৎ। এসব জায়গায় গেলে যেমন ঘোরা যায়, ইতিহাসও জানা যায়।’

সারি বেঁধে ভেতরে প্রবেশ করছেন

মুনিয়ার বাবা আশরাফুজ্মান। তিনি ব্যবসা করেন। থাকেন চট্টগ্রামে। এখন ঈদে পরিবারকে সময় দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমি তো ব্যবসার কাজে ঢাকার বাইরে থাকি। তবে, ওদের মা ওদের সময় বেশি দেয়। সময় পেলেই ঘরতে বের হয়। আমি আজ ওদের জাতীয় জাদুঘরে ঘুরতে নিয়ে আসছি। ওরা সঙ্গে করে ডায়েরি নিয়ে আসছে। বিভিন্ন ইতিহাস লিখে নেবে। ওদের আমি অ্যাসাইনমেন্ট দিয়েছি। এভাবে ঢাকায় বসবাসরত সব শিশু-কিশোরকে জাদুঘর একবার হলেও ঘোরানো উচিৎ।’

ঘুরতে এসেছেন কলেজ পড়ুয়া পেমিকযুগল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা দুজন এক কলেজেই পড়ি। আজ দুতিনটা জায়গায় ঘুরতে যাবো। প্রথম মিউজিয়াম দেখতে আসলাম। আমরা সময় পেলেই বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখি। ভেতরে ঘুরে যেমন দেখা যায়, আবার নিরাপদ আড্ডাও দেওয়া যায়।’

মিউজিয়াম চত্বরে দর্শনার্থীরা

কথা বলেছেন শরীফ মিয়া। তিনি এসেছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে। তিনি বলেন, ‘গ্রামে খুব কম যাই। সময় পেলে বাসার আশেপাশে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরি। বাচ্চারা এখানে আসলে আনন্দ পায়।’

সার্বিক বিষয়ে জাতীয় জাদুঘরের জনশিক্ষা বিভাগের কীপার ড. শিহাব শাহরিয়ার বলেন, ‘সরকারি ছুটি শেষে আজ জাদুঘর খুলেছে। সকাল থেকেই অনেক দর্শনার্থী দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সবাই প্রবেশ করছেন। ঈদের আগেও দর্শনার্থী অনেক ছিল। এখন ঈদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, আশা করা যায়, এখন কয়েক দিন শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থী ভরপুর থাকবে।’

ইত্তেফাক/মাহি