বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০২৩, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

‘আহা এমন যদি সবসময় হতো’

আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২২, ২০:০৮

পরিবার-পরিজনের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন শেষে রাজধানী তথা কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। সড়ক পথে কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে, তবে যানজটের ভোগান্তি ছাড়াই রাজধানীতে ফিরছে সবাই। অনেকে আবার বেরিয়েছেন আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে কিংবা ঘুরতে। 

বুধবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই দূরপাল্লার পরিবহনগুলো ঢাকায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রবেশ করেছে। তবে বেশীরভাগ যাত্রীর অভিযোগ ছিল কিছু কিছু রোডে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে।
 
মহাখালী বাস টার্মিনালের একতা পরিবহনের কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা মিজান ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘সকালে যেসব গাড়ি ঢাকায় ঢুকেছে, সেগুলো যাত্রীতে পূর্ণ ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাসে যাত্রীর সংখ্যা কমতে থাকে। রাস্তা ফাঁকা থাকায় গাড়িগুলো নির্ধারিত সময়ের আগেই টার্মিনালে প্রবেশ করেছে। রাস্তায় কোথাও কোনো যানজট ছিল না।’ 

আজাদ রহমান নামে একজন যাত্রী বলেন, ‘ঢাকায় ফেরার পথে সড়কপথে কোথাও যানজটের কবলে পড়তে হয়নি। ভাবা যায়, ময়মনসিংহ থেকে মাত্র ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটে ঢাকায় প্রবেশ করেছি। এখানেও এসে দেখি পুরো রাজধানী ফাঁকা। সিএনজিরও অভাব নেই, এমনকি রাজধানীর গণপরিবহন পর্যাপ্ত রয়েছে। আহা এমন যদি সবসময় হতো, তাহলে আমরা শান্তিতে সব জাযগায় যাতায়াত করতে পারতাম।’

সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে বাড়ি থেকে ফেরা একজন শিক্ষার্থী বলেন, কিছু দিন পর পরীক্ষা রয়েছে, তাই বাড়িতে থাকার ইচ্ছে থাকলেও থাকতে পারিনি। গতকাল সকাল ৬টায় কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা বাস দুপুর ১২টায় ঢাকায় পৌঁছিয়েছি। রাস্তায় কোথাও যানজট না থাকায় দ্রুত সময়ের মধ্যে চলে আসতে পেরেছি। অনেক মানুষ একসঙ্গে যাত্রা করার কারণে ফেরার পথে টিকিট পেতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছিল। এই সুযোগে অনেক বাস কোম্পানি অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে।’

ঈদের আগে বাড়িতে যেতে না পারা লোকজনকে দেখা গিয়েছে বাড়িতে যেতে। কেউ কেউ প্রয়োজনে, কেউ কেউ আবার স্বজনদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোর উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ছেন।  তবে সময়মত ঢাকা ছাড়ছেন না টার্মিনালে থাকা বাসগুলো। এবিষয়ে একাধিক পরিবহনের টিকিট বিক্রেতারা জানিয়েছেন, যাত্রীর চাপ কম থাকায় কিছুটা দেরি করে বাস ছাড়া হচ্ছে। 

ফাঁকা রাজধানী

এদিকে, ঢাকার গুলিস্তান, মতিঝিল, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, ফার্মগেট, মৌচাক, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ, বনানী, গুলশান, বারিধারা, উত্তরার জনবহুল জায়গাগুলো ছিল ফাঁকা। ছিল না চিরচেনা যানজটের সেই দৃশ্য। অল্প সংখ্যক মানুষ ও যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। আগে ঢাকার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে থাকতে হতো। আর গতকাল রাস্তা ফাঁকা থাকায় মুহূর্তেই চলাচল করা গেছে। যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেট কার, সিএনজি অটোরিকশা, রিকশার সংখ্যা ছিল কম।

নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষের ঢাকায় ফিরতে আরও কয়েক দিন লেগে যাবে। কারণ, অনেকেই ঈদের ছুটির সঙ্গে ঐচ্ছিক ছুটি যোগ করে ঈদ আনন্দ উপভোগ করছেন। এতে আগামী রোববার (১৬ জুলাই) ঢাকায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঢাকার বাইরে যাওয়া সিমের হিসাব দিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ১০ জুলাই রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জানান, ঈদ উপলক্ষে ৮ থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৬৬ জন মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। তবে এই হিসাব গড়ে জনপ্রতি সিমের সংখ্যায় ধরা হয়েছে। ১৮ বছরের নিচে কেউ এই হিসেবের মধ্যে পড়ে না।

গত ১০ জুলাই সারাদেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়।

ইত্তেফাক/এনএ/মাহি