শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

খরায় পুড়ছে ফসলের মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, বীজতলা তৈরি ব্যাহত

আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২২, ০৩:০৪

বিভিন্ন স্থানে খরার কবলে পড়েছে ফসলের মাঠ। বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ সংকটে পড়েছেন কৃষক। আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্তসহ চারা রোপণ ব্যাহত হচ্ছে বলে কৃষক জানিয়েছে। আমাদের সংবাদদাতাদের খবর :

আদমদীঘি (বগুড়া) : প্রচণ্ড খরায় মাঠ পুড়ে চৌচির হয়েছে। এদিকে দীর্ঘদিন বৃষ্টির পানি না থাকায় সময়মতো জমিতে হাল দিতে পারছে না কৃষক। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। এমনকি রোদের তাপে ঘর থেকে বের হতে পারছে না মানুষ। তীব্র তাপে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। খাঁখাঁ করছে রাস্তাঘাটসহ ফসলি মাঠ। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আদমদীঘি উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভায় চলতি মৌসুমে ১২ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বর্তমানে বৃষ্টি না থাকায় কৃষকেরা জমিতে হালচাষ করতে পারছে না। তবে কিছু সংখ্যক এলাকায় খারী, নালা এবং পুকুরের পানি সেচ দিয়ে সামান্য পরিমাণ চারা রোপণ শুরু করেছে। 

আব্দুল মালেক, আবুল কালাম আজাদসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় খরায় মাঠ পুরে চৌচির হয়েছে। জমিতে হাল দেওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মিঠু চন্দ্র অধিকারী বলেন, প্রচণ্ড খরার কারণে কৃষকেরা মাঠে হাল চাষ করতে পারছে না। তিনি কৃষকদের উদ্দেশে বলেন, বৃষ্টি হতে দেরি হলে সেচ দিয়ে জমি তৈরি করে আমনের চারা রোপণ করতে হবে।

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) : ফুলবাড়ী উপজেলা জুড়ে খরার কবলে পড়েছে। এ উপজেলায় গত ১৮-২০ দিন থেকে বৃষ্টির দেখা নেই। সমস্ত খাল-বিল, দোলা-নালা শুকিয়ে যাওয়ায় পানির অভাব দেখা দিয়েছে। এদিকে কৃষকের লাগানো আমন বীজতলা বড় হয়ে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের চাষিরা সেচ ও শ্যালো মেশিন দিয়ে আমন চারা রোপণ করতে শুরু করেছে। 

শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক খলিলুর রহমান ও ময়নুদ্দিন ইসলাম জানান, গত ২০ দিন থেকে বৃষ্টি নেই। প্রখর রৌদ্রে জমি চৌচির হচ্ছে। এদিকে বীজতলাও বড় হয়েছে। তাই বৃষ্টির অপেক্ষায় না থেকে সেচ দিয়ে আমন রোপণ শুরু করেছি। এভাবে সেচ দিয়ে আমনের চাষাবাদ করলে উত্পাদন খরচ বাড়বে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন জানিয়েছেন, চলতি আমন মৌসুমে এ উপজেলায় ১১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃষ্টি না থাকায় সেচ ও শ্যালো মেশিনের পানি দিয়ে চাষিরা আমন ধান রোপণ শুরু করেছে। যা এখন পর্যন্ত ২ হাজার হেক্টর জমির আমন ধান লাগানো হয়েছে।

গঙ্গাচড়া (রংপুর) : গত কয়েক দিন থেকে খরতাপে গঙ্গাচড়াসহ রংপুর অঞ্চলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় আমনের চারা লাগাতে বিলম্ব হচ্ছে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত লোকজনের রাস্তাঘাটে উপস্থিতি থাকলেও দুপুরের পর থেকে রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা দেখা গেছে। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাইরে বের হননি। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষগুলো প্রচণ্ড এই রোদে অনেকেই কাজেই যাননি। অনেক শ্রমিককে প্রচণ্ড রোদ্দুরে গাছের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম বলেন, এখন চলছে খরতাপ। বৃষ্টির কোন লক্ষণ নেই। এ অবস্থায় আমন চারা লাগাতে বিলম্বিত হচ্ছে।

ইত্তেফাক/ইআ