শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

লোডশেডিং

দিনে ১৩ ঘণ্টাই বিদ্যুৎহীন সিলেট

আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২২, ২১:৫৪

ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে সিলেট। সোমবার (২৫ জুলাই) থেকে ১৩ ঘণ্টার লোডশেডিং চলছে। লোডশেডিং-এর এমন শিডিউল ও তীব্র গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের। 

এদিকে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে নগরীর দর্জি পাড়া, সোনাপাড়া সহ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা। সোমবার দুপুরে মীরাবাজার এলাকায় বিদ্যুত অফিস প্রাঙ্গণে শত শত এলাকাবাসী এক ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এসময় বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃপক্ষ এলাকাবাসীকে বার বার লোডশেডিং না করে নির্দিষ্ট সময়ে লোডশেডিং করার আশ্বস্ত করলে তারা অবস্থান কর্মসূচী প্রত্যাহার করেন।

অবস্থান কর্মসূচীতে এলাকাবাসী বলেন, এক সপ্তাহ ধরে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। লোড শেডিংয়ের নির্ধারিত শিডিউল না মেনে কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন পাঁচ-ছয় বার করে লোডশেডিং করছে। যার কারণে ব্যবসায়ীরা যেমন ব্যবসা করতে পারছে না, অন্যদিকে এলাকার বাসা-বাড়িতেও বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে। বিশুদ্ধ খাবার পানিসহ রান্না করার জন্য পানি পাওয়া যাচ্ছে না। যার কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। শিক্ষার্থীরা লেখাপড়াও করতে পাচ্ছে না। অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক কাউন্সিলার দিনার খান হাসু, শফিকুর রহমান প্রমুখ।

এদিকে গত ১৯ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ১ ঘণ্টা করে ৩ বার লোডশেডিংয়ের শিডিউল ঘোষণা করা হয়। কিন্তু  কর্তৃপক্ষ তারা বহাল রাখতে পারেনি। সিলেট নগরীতে রবিবার পর্যন্ত ৪ থেকে ৬ বার ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের ঘটনা ঘটে। এজন্য চাহিদার বিপরীতে অর্ধেকের কম সরবরাহকে দায়ী করছেন বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্টরা।

রবিবার সিলেটে ২১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হয় ৮৮ মেগাওয়াট। এরমধ্যে সিলেট জেলায় ১৪৫ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ হয় মাত্র ৫৯ দশমিক ৫ মেগাওয়াট। ফলে ঘোষিত লোডশেডিংয়ের শিডিউল রক্ষা করতে পারছেনা বিদ্যুৎ বিভাগ।

এদিকে সোমবার থেকে দৈনিক ১৩ ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের নতুন শিডিউল গণমাধ্যমে প্রেরণ করেছে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। দিনে ১৩ ঘণ্টা লোডশেডিং হলে  বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।   সূত্র জানায় রবিবার রাতে ১৩ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের নতুন শিডিউল প্রকাশ করেছে বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ, সিলেট-২। বিউবোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর শিডিউলে দেখা যায়, তাদের আওতায়ভুক্ত এলাকাগুলোর বিভিন্ন স্থানে ১৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

ঘোষিত নতুন শিডিউল অনুযায়ী সোমবার থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১১ থেকে ১৩ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে থাকা এলাকাসমূহ হলো- নগরীর বালুচর, আরামবাগ, আল-ইসলাহ, নতুন বাজার, গোপালটিলা, আলুরতল, টিবি গেট, সঁপারা, মজুমদারপাড়া, পূর্ব মিরাবাজার, দর্জিপাড়া, খারপাড়া, কুমারপাড়া, নাইওরপুল, ধোপাদিধীরপাড়, ঝরনারপাড়, কুশিঘাট, নয়াবস্তি, টুলটিকর, মিরাপাড়া, মেন্দিবাগ, সাদাটিকর, নোওয়াগাঁও, শাপলাবাগ, মেন্দিবাগ, হকার্স মাকেট, কালীঘাট, আমজাদ আলী রোড, মহাজপট্রি, মাছিমপুর, ছড়ারপার, উপশহর ব্লক-এইচ, আই, জে, ই, এফ, জি, সাদাটিকর, রায়নগর, ঝর্নারপাড়, দর্জিবন্দ, বসুন্ধরা, খরাদিপাড়া, দপ্তরীপাড়া, আগপাড়া, কাজীটুলা, মানিকপীর মাজার, নয়াসড়ক, বারুতখানা, জেলরোড, হাওয়াপাড়া, চারাদিঘীরপাড়, চালিবন্দর, কাষ্টঘর, সোবহানীঘাট, বিশ্বরোড, জেলখানা, বঙ্গবীর, পৌরমার্কেট, শিবগঞ্জ, টিলাগড়, সবুজবাগ, সেনপাড়া, হাতিমবাগ, লামাপাড়া, রাজপাড়া উপশহর ব্লক-এ, বি, সি, ডি, তেররতন, মেন্দিবাগ পয়েন্ট, ডুবড়ীহাওর, নাইওরপুল, ধোপাদিঘীরপাড়, সোবহানীঘাট, বঙ্গবীর যতরপুর, মিরাবাজার, আগপাড়া, ঝেরঝেরিপাড়া, মীরেরচক, মুক্তিরচক, মুরাদপুর, পীরেরচক এলাকা। 

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির বলেন, সিলেট মহানগরীর ৫টি অঞ্চলে রবিবার বিকেলে চাহিদা ছিলো ২০০ মেগাওয়াট। কিন্তু ওই সময় আমরা সরবরাহ পেয়েছি অর্ধেকের চেয়েও কম। ৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিয়ে গ্রাহক সেবা দিতে হচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে। তবে আগামী ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে এ অবস্থার উন্নতি হতে পারে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেছেন।

ইত্তেফাক/জেডএইচডি