নির্মাণ কাজ শুরুর ৬৪ মাস পর উদ্বোধন করা হয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীদের বহুল প্রতীক্ষিত শেখ হাসিনা হলের। এটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীদের জন্য নির্মিত দ্বিতীয় হল। রবিবার (৩১ জুলাই) বেলা ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন কেক ও ফিতা কেটে এবং পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে হলটির উদ্বোধন করেন।
হল প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হল প্রাধ্যক্ষ সাহেদুর রহমান বলেন, এই হলটি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি মডেল হলে রূপান্তরিত হবে। আমরা ছাত্রজীবনে যা শিখেছি তা হল লাইফ থেকেই শিখেছি। আমি উপাচার্যের নির্দেশনার আলোকে কাজ করবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যেন কোন অবমাননা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবো। আমি ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলবো যারা এই হলে উঠবেন তারা এই হল পরিপাটি রাখবেন।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে নতুন হলে থাকা সৌভাগ্যের ব্যাপার। এই হলে যারা থাকবেন আপনারা অবশ্যই সৌভাগ্যবান। অনেক বিড়ম্বনার পরে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা ছিল। এই হলকে মডেল হল তৈরি করার জন্য শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, যারা এই হলটির নামকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে মিল রেখেছেন আমি তাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের ইতিহাসে এখনো শেখ হাসিনার নামে কোন হল হয়নি। কিন্তু এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৫ বছরে সেটা করতে পেরেছে। এটি আমাদের জন্য আনন্দের। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার বাস্তব প্রয়োগ হয় হল জীবন থেকে। আমি প্রাধ্যক্ষকে অনুরোধ করব, ভবিষ্যতে হলের কার্যক্রমের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রীর লিখিত এবং সম্পাদিত বই সমূহ উপহারের ব্যবস্থা করার জন্য।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন বলেন, শেখ হাসিনা হলের উদ্বোধনের দিনটি আমাদের জন্য আনন্দের। আমি ৬ মাস আগে এখানে এসেছি এবং ৬ মাসে এই হলের কাজ শেষ করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। সে অনুযায়ী পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছি। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে আমরা অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছি। আমরা ঠিকাদারের সাথে বারবার মিটিং করেছি এবং তাদের কাছ থেকে দলিলে স্বাক্ষর নিয়েছি যাতে ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ হয়। আমি সবসময় এই হলের তদারকি করেছি। পাশাপাশি এই হলটি অন্য সকল হলের কাছে রোল মডেল হবে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। আমি প্রভোস্টকে বলেছি এই হলের সার্বক্ষণিক তদারকি করতে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের মার্চে ২৫৬ আসন বিশিষ্ট হলটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৮ মাসে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ৬৪ মাস পর কাজ শেষ হয়েছে এ হলটির। ইতোমধ্যেই হলে প্রায় তিনশত ছাত্রীকে আসন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।