নাগরিকদের ওপর নজরদারি বাড়াতে চীনা প্রযুক্তি ব্যবহার করছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। নতুন এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশটির সেনাবাহিনী চীনা ফেসিয়াল রেকগনিশন প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছে। এতে দেশটির গণতান্ত্রিক দল ও বিদ্রোহী দলগুলোর কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে। বুধবার ( ৩ আগস্ট) এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন এই তথ্য জানিয়েছে।
নজরদারি বাড়াতে মিয়ানমার হুয়াওয়েই, ডাহুয়া ও হিকভিশনের মতো চীনা প্রযুক্তি এনেছে। এসকল ক্যামেরায় অত্যাধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ ঘটানো হয়। এর মাধ্যমে জনসম্মুখে কোন ব্যাক্তির চেহারা ও ড্রাইভিং লাইসেন্স শনাক্ত করা সম্ভব। ওয়ান্টেড লিস্টে থাকা ব্যক্তিদের শনাক্ত হলে কর্তৃপক্ষকে জানায় এই প্রযুক্তি, ডয়েচে ভেলের এক রিপোর্টে বলা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহার আশংকাজনক। সামরিক জান্তার বিরুদ্ধের যেকারো বিরুদ্ধে এই প্রযুক্তির ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে।
ইয়াঙ্গুন ভিত্তিক সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় থিনজার শুনলেই ই বলেন, এই প্রযুক্তির ব্যবহার দেশটির জন্য নতুন হুমকি স্বরুপ। 'আমরা এখন প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে লড়ছি,' বলেন থিনজার।
মানবাধিকার কর্মীরা সম্প্রতি প্রকাশিত একটি রিপোর্টে জানায়, এই প্রযুক্তির ব্যাবহার মানবাধিকারের জন্য বিশাল হুমকি স্বরূপ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পরিচালক ফিল রবার্টসন ডয়চে ভেলেকে বলেন, সামরিক জান্তারা এটি ব্যবহার করে সর্বদা প্রতিটি গাড়ি, মোটরসাইকেলের গতিবিধি নজরে রাখছে এবং তাদের বিরুদ্ধগামীদের মেরে ফেলার সুযোগ রয়েছে।
দেশটির সবচেয়ে বড় টেলিকমিউনিকেশন ব্র্যান্ড টেলিনর নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার মাধ্যমে মিয়ানমারে সামরিক জান্তা ইন্টারনেট অ্যাকসেসে বাধা প্রদান করে এবং অনলাইন কন্টেন্ট সেন্সর করে।
বিভিন্ন রিপোর্টে আরও বলা হয়, জান্তা সরকার টেলিকম সেবায় এবং ইন্টারনেট সরবরাহকারীদের কাছে আড়িপাতার ব্যবস্থা করে। এতে করে তারা আরও ভালভাবে পরিস্থিতির দেখভাল ও অনলাইন দেশদ্রোহীদের সঙ্গে লড়তে পারবে বলে জানায়।
'এই নজরদারি গ্রহণের পর থেকে এর অপব্যবহারের ঘটনা ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। আমরা প্রতিদিনই অতিমাত্রায় গ্রেফতার দেখছি,' বলেন থিনজার।
অভিযোগ, এর পুর্বেও দেশটির নেত্রী অং সান সুচি'র নেতৃত্বে গঠিত সরকার তাদের নিজেদের উদ্দেশ্যে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
সামরিক জান্তা গত এক ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে গণতান্ত্রিক সরকার উচ্ছেদ করে সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠা করে। রপর থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সামরিক জান্তার বিপুল পরিমাণে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের খবর প্রকাশ করে।