হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় বিলুপ্তির পথে বাঁশ-বেতশিল্প। এসব উপাদান দিয়ে তৈরি আসবাবপত্রের কদর কমেছে। প্লাস্টিক ও ধাতব আসবাবপত্রে বাজার ভরে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আগে গ্রাম এলাকা থেকে শুরু করে শহর পর্যন্ত প্রতিটি ঘরেই বাঁশ ও বেতের তৈরি আসবাবপত্রের দেখা মিলত।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শায়েস্তাগঞ্জ পৌর শহরের দাউদ নগর বাজার, আলীগঞ্জ বাজার (ড্রাইভার বাজার) ও শায়েস্তাগঞ্জ পুরান বাজারে বাঁশ ও বেতের তৈরি আসবাবপত্র নিয়ে বসেন কিছু সংখ্যক বিক্রেতা। সেখানে তারা কুলা, ডালা, খাঁচা, পলো, টুকরি, বেতের ঝাঁজরি, ছাতা, মাছ ধরার লুংগা, উফা, চাছ, দাড়ি, ঢোল, শীতলপাটিসহ বাঁশ ও বেতের পসরা নিয়ে বসেন।
দাউদ নগর বাজারের বিক্রেতা মো. বাবুল মিয়া জানান, আগের মতো বেতসামগ্রী নেই, নিত্যনতুন প্লাস্টিকসামগ্রী ও অ্যালুমিনিয়াম সামগ্রী বাজারে প্রচুর আসায় বেত ও বাঁশের তৈরি সামগ্রীতে মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। তাছাড়া বাঁশের দাম বেশি হওয়ায় অনেকেই এসব জিনিস তৈরি ছেড়ে দিয়েছেন। এলাকায় আগের মতো এসব সরঞ্জামাদি তৈরি না হওয়ায় তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিশ্ব রোড থেকে এসব সরঞ্জামাদি পাইকারি মূল্যে কিনে আনেন। সেখান থেকে এনে খুচরা মূল্যে বিক্রি করেন।
শায়েস্তাগঞ্জের ছনাও গ্রামের নারী কারিগর শ্রী মিলন মহি সরকার বলেন, এখন বাঁশের দাম বেশি। বাজারে উপযুক্ত মূল্য না পাওয়ায় আগের মতো বাঁশের তৈরি সরঞ্জামাদি তৈরিতে আগ্রহ অনেক কমে গেছে। তাছাড়া আগের চেয়ে এখন এসব জিনিসের চাহিদাও কমে গেছে।
কারিগর শ্রী বকুল সরকার বলেন, এখন বাজারে প্লাস্টিকের সরঞ্জামাদি সয়লাবে বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি সরঞ্জামাদির চাহিদা অনেক কমে গেছে।
বিক্রেতা মনোরঞ্জন দাস জানান, প্রতিদিন তিনি শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও এলাকা থেকে এসব বাঁশ ও বেতশিল্প দিয়ে তৈরি সরঞ্জামাদি পাইকারি মূল্যে ক্রয় করেন। পরে তিনি শায়েস্তাগঞ্জে নিয়ে এসে খুচরা মূল্যে বিক্রি করেন। এতে যা লাভ হয় তা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে তার।
এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজরাতুন নাঈম বলেন, ব্যক্তি উদ্যোগে যারা এসব কাজ করেন তাদেরকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা প্রদান করা হবে। এ শিল্প রক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।